সিংড়াঃ বুধবার সকালে নাটোরের সিংড়া উপজেলার রামানন্দ খাজুৃরা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত খাজুরা গ্রামে ৬ কৃষক পরিবারের উপর নেমে এসেছিল নজিরবিহীন তান্ডবলীলা। যেন কয়েক জনমের শত্রুতা। ওই কৃষক পরিবারগুলোর সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। এমনকি বাদ যায়নি টিউবয়েলের হাতলও। সেটিও ভেঙ্গে নিয়ে ভাংচুর করা হয় ঘরবাড়ি।
বুধবার সকাল ৮টায় উপজেলার রামানন্দ খাজুরা গ্রামে এই হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। পরে সিংড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায় আতংকে ওই ৬ কৃষক পরিবারে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিংড়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল রামানন্দ খাজুরা গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বুধবার সকালে আ’লীগের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ ওরফে বাবা সুলতানের ছোট ভাই ফেরদৌস, এনামুল ও রকিবের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ আনোয়ার হোসেন ও শহিদুল ইসলাম সহ ৬ কৃষকের বাড়ি-ঘরে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় ওই ৬ কৃষকের বাড়ি-ঘরে ভাংচুর ও তান্ডব নিলা চালায় সুলতান বাহিনী ও তার লোকজন। পুড়িয়ে দেয়া হয় একটি মোটর সাইকেল। নগদ ২ লক্ষাধিক টাকা, স্বর্ণ, গবাদী পশু সহ বিভিন্ন জিনিস পত্র লুটে নেয় প্রতিপক্ষরা।
কৃষক আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগম কাতর কন্ঠে বলেন, সন্ত্রাসীরা গহনা ও গরু-বাছুর লুট করে নিয়ে গেছে। আর বাকি জিসিনপত্র সবই ভেঙ্গে ফেলেছে। কোন মতো জানডা নিয়ে বেঁচে গেছি। বাড়ির পুরুষ মানুষদের গ্রামে আসা নিষেধ করে দিয়েছে।
অপর কৃষক শহিদুল ইসলামের স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, সুলতান বাহিনীর ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খোলে না। আর তাদের বিরুদ্বে থানায় কোন মামলা দিলেও নিতে চায় না পুলিশ। আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ফেরদৌস মোবাইল ফোনে বলেন, তিনি বাড়ি-ঘর ভাংচুরের ঘটনায় জড়িত নন। আর তিনি সকাল থেকেই বাহিরে রয়েছেন। অপর অভিযুক্ত এনামূল হকের মোবাইলে বার বার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেন, এলাকার জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে আনোয়ার হোসেন ও প্রতিপক্ষ ফেরদৌস এর লোকজনের মধ্যে মঙ্গলবার বিকেলে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের মিন্টু ও আনোয়ার হোসেন আহত হয়। আর এরই জের হিসেবে বুধবার প্রতিপক্ষরা বাড়ি-ঘর ভাংচুর করেছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি উভয় পক্ষ শান্ত থাকার অনুরোধ করেছেন।
সিংড়া থানার ওসি তদন্ত নেয়ামুল আলম জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন মামলা বা কাউকে আটক করা হয়নি।