নাটোর অফিসঃ
নাটোরের বাগাতিপাড়ার শিরিন-জিয়া দম্পতি নিজেদের চিকিৎসার জন্য জমানো অর্থ বিতরণ করেছেন করোনায় কর্মগহীন হয়ে পড়া অসহায় দরিদ্র মানুষদের মাঝে। জিয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। স্ত্রী শিরিন আনসার- ভিডিপি’র পৌর ওয়ার্ড লিডার। নিজেদের কোন জমি বা সম্পদ নেই। থাকেন উপজেলা সদরের রেলগেট এলাকায়। রেলের জমিতে স্ত্রী শিরিন আকতার ও দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন জিয়াউর রহমান। বড় ছেলে রাজশাহী পলিটেকনিক্যালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করছে। ছোট ছেলে হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়ছে।
জিয়াউর রহমান জানান, তার স্ত্রী শিরিন আক্তার দীর্ঘ আট ব্ছর থেকে হার্ট, কিডনী এবং মেরুদন্ডের অসুখে ভুগছেন। তাদের খুব কষ্টে অর্জিত অর্থ জমা করা হয় স্ত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য। ওই জমানো টাকায় ভারতে স্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। এরই মধ্যে মরনঘাতি করোনা ভাইরাসে মানুষকে আক্রান্ত করছে। ফলে সামাজিক নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতে সরকার ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় তারা ভারতে যেতে পারছেননা। এদিকে করোনা মোকাবেলার যুদ্ধে ঘরে থাকতে গিয়ে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এসব অসহায় মানুষদের চাপা কান্না তাদেরকে কষ্ট দিচ্ছে। তাই নিজেদের চিকিৎসার জন্য জমানো টাকা দিয়ে সমাজের এসব মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি। গত তিন দিন থেকে বাজার থেকে ৫ কেজি করে চাল- আলু, শাক-সবজি, তেল, সাবান কিনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরে শান্তি লাগছে।
শিরিন আক্তার বলেন, মানুষের জন্যই মানুষ। মানবতা সবার আগে, এরপর অন্য কিছু। নিজেরা পেট ভরে খেয়ে শান্তিতে থাকবো আর প্রতিবেশী অসহায় মানুষগুলো না খেয়ে কষ্ট করবে, তা হয় না। এমন অনুভব থেকেই নিজেদের যা আছে তাই দিয়ে মানুষদের সহযোগিতা করছি। চিকিৎসার জন্য জমানো অর্থ কেন খরচ করছেন জানতে চাইলে শিরিন বলেন, আগে মানুষ বাচুক, পরে চিকিৎসা হবে।