নাটোর অফিস॥ নাটোরে প্রভাবশালী ব্যক্তির কবল থেকে হিমাগার রক্ষার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এক মালিক। আজ রোববার(১৬ই ফেব্রুয়ারী) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে হিমাগার রক্ষায় নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন বিশ্বাস কোল্ড স্টোরেজের মালিক নজরুল ইসলাম বিশ্বাসসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।
নজরুল বিশ্বাস অভিযোগ করেন, আর্থিক সংকটের কারনে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির জন্য নাটোর চিনিকলের কর্মচারি কামাল হোসেনের স্ত্রী আবিদা সুলতানার কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা বায়না গ্রহণ করেন। শর্ত অনুযায়ী অগ্রণী ব্যাংকের দুটি শাখায় দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠানটিকে ঋণমুক্ত করার কথা ছিল। কিন্তু তা না করে এবং পূরো প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় না করে উল্টো মুনাফা ভোগ করছেন কামাল হোসেন। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি আর বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি ক্রেতা আবিদা সুলতানা ও তার স্বামী চিনিকলের কর্মচারী কামাল হোসেনসহ ব্যাংককে জানানো হয়। পরে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে হিমাগার মালিক সূদসহ আবিদা সুলতানার স্বামী কামাল হোসেনকে বায়নার ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধ করে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, টাকা ফেরৎ পাওয়ার পরও কামাল হোসেন নানা ভাবে হুমকি ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বিশ্বাস কোল্ড স্টোরেজ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে কোল্ড স্টোরের ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, বিশ্বাস কোল্ড স্টোরেজ ও নজরুল ইসলাম মাল্টি পারপাস কোল্ড স্টোরেজ নামে অগ্রণী ব্যাংক নাটোর শাখা ও রাজশাহীর সাহেব বাজার শাখা থেকে তিনটি ধাপে ঋণ নেয়া হয়। সেই ঋণ সূদসহ স্থিতি দাড়ায় ২০ কোটি ১৯ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৫ টাকা। ওই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে মালিক তা বিক্রি করে বা হস্তান্তর করে সমস্ত দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। ব্যাংক এই সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সম্পত্তি ক্রয়ে আগ্রহী এস এস এ্যাগ্রো ট্রেড লিংক এর সাথে স্টোরেজ মালিক এবং ব্যাংকের ত্রি-পাক্ষীয় চুত্তিও করেন। তবে পরবর্তীতে এসএস এগ্রো ট্রেড তা নিতে নানা টালবাহানা করে প্রায় দেড় বছর পর বায়না স্বরুপ দেয়া টাকাও সূদসহ ফেরত নেন। এরপরই এস এস ট্রেড মালিক বিশ্বাস স্টোরেজ এর চলাচলের রাস্তা অবৈধ ভাবে বন্ধ করে দেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি দখল নিতে নানা অপচেষ্টা সহ হয়রানি করে আসছে এবং মালিকানা দাবী করছে। সামনে স্টোরেজ আলু সংরক্ষণ মৌসুমের আগে এসে তিনি নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন এবং স্থানীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে যোগশাজস করে চক্রান্ত শুরু করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ত্রিপক্ষীয় চুক্তির পর কামাল হোসেনকে বায়নার সমুদয় টাকা ফেরত দেয়ার পর তিনি কোল্ড ষ্টোরেজে প্রবেশের রাস্থা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে চলতি মৌসুমে আলু সংরক্ষণ করতে বাধাগ্রস্থ হবেন ষ্টোর মালিক। সম্মেলনে স্টোরেজ মালিক নজরুল ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে সোহেল বিশ্বাসসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে আমার কোন ব্যক্তি বিরোধ নেই। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ব্যাংকের ঋণ খেলাপী হওয়ায় ব্যাংকের সাথে আমার, মালিক এবং ব্যাংকের ত্রি-পাক্ষিক চুক্তি হয়। তাতে আমাকে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব হস্তান্তর করতে নির্দেশ করে। সেই মোতাবেক আমি ৭৫ লাখ বায়না দিয়েছিলাম। তবে জটিলতার কারণে ওই টাকা ফেরত নিয়েছি। কিন্তু চুক্তিমত আমি ওই প্রতিষ্ঠানের দাবীদার সেজন্য ব্যাংক বিশ্বাস স্টোর মালিককে চিঠিও দিয়েছে বলে আমি জেনেছি। বিশ্বাস কোল্ড স্টোরেজে যাতায়াতের রাস্তা নিয়ে একটু সমস্যা রয়েছে বলে দাবি করেন কামাল হোসেন।