নাটোর অফিস॥
এক হাজার ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নাটোরের নারদ ও বড়াল নদ এবং নন্দকুজা নদী সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সংস্কারের প্রথম ধাপে নদ-নদীর দুই পাড়ের দখলে থাকা স্থাপনা অপসারণের কাজ শুরু হবে আগামীকাল সোমবার থেকে।
স্থানীয় কল-কারখানার বর্জ্যে দুষণ, ভরাট হয়ে দখল হয়েছে এসব নদ-নদী। এর আগে নদ-নদী পাড়ের দখলে রাখা জমির স্থাপনা নিজ উদ্যোগে অপসারণ করতে ৩৯ দখলদারকে নোটিশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নারদ পাড়ে দুই শতাধিক দখলদার চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম ধাপে ১১ জনকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বড়াল নদ দখলকারী বাগাতিপাড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় ১৮ জন এবং নন্দকুজা নদীর জন্য গুরুদাসপুর উপজেলার ১০ জন দখলদারকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নারদ সংলগ্ন বেশ কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা দখলদাররা স্বেচ্ছায় অপসারণ করেছে।
সম্প্রতি নারদ ও বড়াল তীরবর্তী এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সদর উপজেলার মেহানপুর, পীরগঞ্জ, কসবা, হাশিমপুর ও সাধুপাড়া গ্রামে নারদ নদের উপর ছোট ছোট কালভার্ট রয়েছে। তবে এসব কালভার্টের কোনটির নিচ দিয়েই পানি প্রবাহিত হয় না। এছাড়া সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়নের লোটাবাড়িয়া গ্রামে নারদের উপর মাটি ফেলে রাস্তা নির্মাণ করেছে এলাকাবাসী। এসব ছাড়াও নারদে পানি প্রবেশের পথে রাজশাহীর চারঘাট স্লুইচগেটের চেয়েও আরো ৩৫টি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এর মধ্যে বাগাতিপাড়ার পকেটখালী এলাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের একটি সেতু ও পীরগাছা এলাকায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের একটি ক্রস ওয়াল (নদীবেষ্টনী বাঁধ) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয়রা মনে করেন, দুই নদে পানি প্রবাহে বড় প্রতিবন্ধকতাসৃষ্টিকারী এসব স্থাপনা অপসারণ না করলে সংস্কার কাজ তেমন সুফল বয়ে আনবে না।
জেলা প্রশাসক, নাটোর মোহাম্মদ শাহরিয়াজ বলেন, নদ-নদীতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিতে নদী কমিশন, ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় জনগণসহ সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনার পরই সংষ্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অবৈধ দখল উচ্ছেদের পর আগামী শুষ্ক মৌসুম থেকে সংস্কার কাজ পুরোদমে শুরু করা হবে।
নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, নদ-নদী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রশাসনকে কাজ করতে বলা হয়েছে। তবে যারা ভুমিহীন দখলদার, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। এজন্য জেলা প্রশাসনকে জমি চিহ্নিত করেত বলা হয়েছে। তাদের বাসস্থানের জন্য ঘর তৈরী করে দেয়া হবে।