নাটোর ও নলডাঙ্গা অফিস॥
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, হুমকি ও মারপিটের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের বাঁশভাগ গ্রামের কাজী নজরুল ইসলামের ছেলে কাজী ইউনুছ নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ খোরশেদ আলমের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
বিচারক শুনানী শেষে আগামী ২রা ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত পূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আজ রোববার (০৩ নভেম্বর) বিকেলে মামলাটি দায়ের করেন বাদী। মামলায় আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আদিল খান মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণীতে জানানো হয়, নারায়নগঞ্জ জেলার একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামী কাজী ইউনুছের ছোট ভাই কাজী সুমন। সুমনকে জামিনের ব্যবস্থাসহ অব্যাহতি দেয়ার বিনিময়ে কাজী ইউনুসের নিকট দুই লাখ টাকা দাবী করেন আসাদ। দাবী অনুসারে ২০১৭ সালের ৩রা নভেম্বর স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে কাজী ইউনুছ প্রথম দফায় আসাদকে এক লাখ টাকা দেন। কিছু দিন পর আবারও মামলার খরচ বাবদ আরো এক লাখ টাকা দাবী করলে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন কাজী ইউনুস। বাকী টাকা পরিশোধ না করায় পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আসাদ তাদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ অবস্থায় গত ২৪ অক্টোবর কাজী ইউনুছ স্থানীয় নলডাঙ্গা বাজারে গেলে আসাদ তার ভাড়াটিয়া কয়েকজন সন্ত্রাসী দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে নিজ অফিসে নিয়ে যান এবং এক লাখ টাকা দাবী করেন। আবারও টাকা না দেয়ার কথা জানালে তাকে মারপিট করা হয়। এক পর্যায়ে কাজী ইউনুসের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন।
মামলার বাদী কাজী ইউনুস জানান, ‘ওই ঘটনার পর থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদ এক লাখ টাকা আদায় করতে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছেন। অন্যথায় ভাইসহ আমাকে মারপিটসহ প্রাণণাশের হুমকি দেন। এর প্রেক্ষিতে আসাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছি।’
এ ব্যাপারে মামলার বিবাদী ও নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘লাখ টাকা চাঁদা দাবীর ঘটনা সর্বৈব মিথ্যা। বরং বাদী কাজী ইউনুসের কাছে আমার ২৯ হাজার টাকা পাওনা আছে। পাওনা আদায়ে নলডাঙ্গা থানায় শালিশী বৈঠকের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমাকে ২৯ হাজার টাকার চেক দেন কাজী ইউনুছ। কিন্তু ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে দেখি তার একাউন্টে কোন টাকা নেই। আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করে মামলাটি করা হয়েছে।’
নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ(তদন্ত) উজ্জল হোসেন বলেন, মৌখিকভাবে আমরা মামলার বিষয়টি জেনেছি কিন্ত এ সংক্রান্ত আদালতের কোন নির্দেশনা হাতে পাইনি। প্রাপ্তিসাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, আসাদুজ্জামান চলতি বছরের ১৮ই মে নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কয়েকমাস আগে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত এক নারী তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন।