নাটোর অফিস॥
নাটোরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্ধিত সভায় গত উপজেলা নির্বাচনের সময় নৌকা প্রতিকের বিপক্ষে কাজ করায় এবং সাম্প্রতিক সময়ে দলের ইউনিয়ন ও পৌর কমিটির কাউন্সিল করা নিয়ে দলের নেতা কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন দুই সাংসদ। এসময় দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত সকলে মিলে একজোট হয়ে কাজ করার অঙ্গিকার নিয়ে শান্তিপুর্নভাবে সভা শেষ হয়।
শনিবার সকাল ১০ টা থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের কান্দিভিটাস্থ দলীয় কার্যালয়ে এই বর্ধিত সভাস্থ এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এনিয়ে দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীর মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করে। জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতা এনিয়ে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে ,বিগত কোন সময়েই জেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় এভাবে পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। এদিনের বর্ধিত সভার জন্য পুলিশ মোতায়েনের কোন প্রয়োজন ছিলনা।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান খান, জজ কোর্টের পিপি ও সিনিয়র সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সহ সভাপতি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, সহ সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ সভাপতি সামছুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মোর্তুজা আলী বাবলু,যুগ্ম সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, সাংগঠনিক সম্পাদক মালেক শেখ,প্রচার সম্পাদক চিত্তরঞ্জন সাহা,দপ্তর সম্পাদক দিলীপ কুমার দাসসহ জেলা আওয়ামীলীগ কার্যকরি সদস্য এবং বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শুরুর পূবেই দলীয় কার্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দলীয় কার্যালয় থেকে সাব রেজিষ্ট্রি অফিস পর্যন্ত সড়ক চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। এসময় ওই সব এলাকায় চেক পোষ্ট বসিয়ে পথচারীসহ দলীয় নেতা কর্মীদের তল্লাশী করা হয়। এতে করে দিনভর ওই এলাকার মানুষদের দুর্ভোগ সহ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এছাড়া দলীয় কার্যালয় প্রবেশের মুল গেটে আর্চওয়ে গেট বসানো হয়। এতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জেলা আওয়ামীলীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক দিলীপ কুমার দাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামীলীগ কোন সন্ত্রাসী দল নয়। সভা-সমাবেশে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি বজায় রাখার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন জরুরী। তবে আওয়ামীলীগের ঘরোয়া বা এ ধরনের বর্ধিত সভায় কখনও এত বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের প্রয়োজন পড়েনা। কি কারনে বা কোন উদ্যেশ্যে এত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে তা বোধগম্য নয়। এছাড়া এই বর্ধিত সভাকে ঘিরে কোন অনাকাংখিত পরিস্থিতি ঘটার কোন আশংকা ছিলনা। কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলা অঅওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে এত বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের জন্য বলা হয়নি। কেন মোতায়েন করা হয়েছে তা তিনি জানেননা। পুলিশ মোতায়েন ও রাস্তা বন্ধ করে তল্লাশীর কারনে সাধান মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তবে তিনি বলেন,হয়ত পুলিশের কাছে বিশেষ কোন গুরুত্বপুর্ন তথ্য ছিল বিধায় তারা অতি উৎসাহি হয়ে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করেছেন।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, শৃংখলা বজার রাখার স্বার্থে সভা-সমাবেশ এলাকায় আইন শৃংখলা বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। এ ক্ষেত্রেও কোন ব্যতিক্রম করা হয়নি। ভবিষ্যতে এধারা অব্যাহত রাখা হবে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন ,উপরের বিশেষ নির্দেশে এই বর্ধিত সভা এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তাদের কাছে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটার আশংকা ছিল।