নাটোর অফিস॥
অধিগ্রহনকৃত জমির মূল্য পেতে ১৪ বছর ধরে নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ধর্না দিচ্ছেন নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুরের তারেকুজ্জামান উজ্জল। এখনও নায্য পাওনা না পেয়ে নাটোর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গলায় প্লাকার্ড ঝুলিয়ে একাই দাঁড়িয়ে তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্বেও অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য না পেয়ে আজ মঙ্গলবার(২২শে অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ওই ব্যক্তি এই অভিনব প্রতিবাদ জানান।
নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা তারেকুজ্জামান উজ্জল যখন একাই দাঁড়িয়ে এই প্রতিবাদ করছিলেন তখন গণমাধ্যমকর্মীসহ উৎসুখ জনতা তাকে দেখতে ভীড় করেন।
তারেকুজ্জামান উজ্জল অভিযোগ করেন, ২০০৫ সালে লালপুর উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় বৈদ্যনাথপুর মৌজায় তার নিজ নামীয় ৭৩ শতক জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। এসময় সাবেক ২৫৬ এবং হাল ২৮২ দাগের ৫৩ শতক জমির কাত ১০ শতক এবং সাবেক ২৫৫ ও হাল ২৮৩ দাগের ১০ শতক মোট ২০ শতক জমির মূল্য বাবদ ২৩ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯ শত নিরানব্বই টাকা তিনি বুঝে পান। কিন্তু ওই দুই দাগের অপর ৫৩ শতক জমির মূল্য ৬২ লাখ ২৭হাজার ৪৫০ টাকা তিনি আজও বুঝে পাননি। বিষয়টি নিয়ে তিনি উচ্চ আদালতে রীট করলে আদালত জমির মূল্য পরিশোধ অথবা জমি ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ না মানায় হাইকোর্ট পুনরায় ২০১৭ সালে ৫ ডিসেম্বর বিবাদীদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবেনা, তা চার সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেন। কিন্তু এখনো সে জমির মুল্য বুঝে পাননি তিনি।
উজ্জল জানান, তিনি ২০০৫ সাল থেকে নাটোর আদালত ও কালেক্টরেট ভবনে ধর্না দিয়ে চলেছেন। কিন্ত কোন কাজই হয়নি। তাই এবার তিনি নায্য পাওনা আদায়ে নাটোর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি একক ভাবে এই প্রতিবাদ জানান।
তিনি দ্রুত উচ্চ আদালতের ৯০৩৫/১৫ নং আদেশের বাস্তবায়ন চান। আদালতের ওই আদেশের মাধ্যমে তার টাকা পরিশোধ অথবা জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান তারেকুজ্জামান উজ্জল।
এ বিষয়ে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব শরিফুন্নেছা বলেন, ওই জমি অধিগ্রহণের কোন বরাদ্দ ছিল না। কনটেম্পট অব কোর্টের নোটিশ প্রাপ্তির পর উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। আবেদনকৃত সম্পত্তির মালিকানা সংক্রান্ত আইনগত জটিলতার কারণে ওই সময় উপজেলার বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হলেও অধিগ্রহণ করা যায়নি। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষের দিকে। অল্পদিনের মধ্যে তিনি ক্ষতিপুরণের টাকা পেয়ে যাবেন।