নাটোর অফিস॥
নাটোরের বড়াইগ্রামের লালনভক্ত বাউল সুভাস রোজারিওকে অপহরণ বা নিখোঁজ হননি বলে দাবী করে নাটোর জেলা পুলিশ সুপার লিটুন কুমার সাহা বলেছেন, বিবাগী বাউল সুভাস রোজারিও স্বেচ্ছায় অন্তর্ধানে ছিলেন। বাউল সুভাস রোজারিও আগে থেকে আধ্যাত্নিক গানবাজনা করতেন। এসব আধ্যাত্নিক গান শুনে মনোজগতের পরিবর্তন হলে অজানার উদ্যেশ্যে রওনা হন এবং সাধনা শুরু করেন। তাকে কেউ অপহরণ বা তিনি নিজেও আত্মগোপন করেননি।
আজ শনিবার(১৯শে সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে খ্রিষ্টান বাউল সুভাস রোজারিওর উপস্থিতিতে জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এ তথ্য দেন। পুলিশ সুপারের দাবীর প্রতি একমত পোষণ করেন সুভাষ রোজারিও। তবে তিনি জানিয়েছেন, আবারও ঘর-সংসার ত্যাগ করে তিনি বিবাগী হবে।
প্রেস ব্রিফ্রিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে লালনভক্ত শিল্পি সুভাস রোজারিও তার গ্রামের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চামটা থেকে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। উপজেলার জোনাইল বাজার থেকে তাকে বহনকারী সিএনজি চালক পাবনার চাটমোহর রেলওয়ে স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে আসার পর থেকে লালন শিল্পি সুভাস রোজারিও নিখোঁজ হন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়। খোজাখুজি করে কোথায় না পেয়ে ওই খ্রিষ্টান বাউলের ভাই লুইস রোজারিও গত ৫ অক্টোবর বড়াইগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করার পর মামলা হলে ৩৬৪ ধারার পেনাল কোড রুজু করা হয়। এ ঘটনায় উপরমহল থেকে অনেক চাপ ছিলো এবং খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। এর পর নাটোরের পুলিশ তার সন্ধানে মাঠে নামে। পুলিশ সুপারের নির্দেশে বড়াইগ্রাম সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুনুর রশীদ এবং মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই সুমন আলী সহ বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের একটি চৌকস দল বাউল কুষ্টিয়ায় অবস্থান করছেন এমন ধারণার পর সেখানে অবস্থান নেন। সেখানে বাউল ভক্তদের মাধ্যমে লালন শিল্পি সুভাস রোজারিওর সন্ধান করতে থাকেন তারা। পরে অনুসন্ধান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার(১৮ই অক্টোবর) সন্ধায় কুষ্টিয়া জেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার অধীন হরিনারায়নপুর গ্রামের শ্বশান হতে বাউল রোজারিওকে উদ্ধর করা হয়।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ঘটনাস্থল পাবনা অঞ্চল হলেও নাটোরের পুলিশ অনুসন্ধান অভিযান চালায়।
প্রেস ব্রিফ্রিংয়ে স্ব-শরীরে উপস্থিত খ্রিষ্টান বাউল সুভাস রোজারিও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তিনি কাউকে দুঃখ দিতে আত্মগোপন করেননি। জাগতিক সবকিছু পরিত্যাগ এবং সব ধরনের লোভ লালসা থেকে দুরে গিয়ে সাধনা শুরু করেন। তাকে ফিরে পাওয়ার জন্য যারা মানববন্ধন সহ অনেক কিছু করেছেন তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।