নাটোর অফিসঃ
জমি নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধের জেরে বৃদ্ধা মাকে অভুক্ত রেখে দিনভার তালা দিয়ে রাখ হয়। ঘটনাটি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলারদক্ষিণ মুরাদপুর গ্রামের। খবর পেয়ে শনিবার(৫ই অক্টোবর) সন্ধ্যার আগে পুলিশ গিয়ে দিনভর অভুক্ত বৃদ্ধা হাজেরা বেওয়াকে(৯০) উদ্ধারের পর খাবার খেতে দেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চার ভাইয়ের মধ্যে ছোটভাই আক্তারের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ বাধে অপর তিন ভাইয়ের। তাদের হামলার শঙ্কায় শনিবার সকালে মাকে বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রেখে স্ত্রীসহ গা ঢাকা দেয় আক্তার। বৃদ্ধা হাজেরা বেওয়া ওই গ্রামের মৃত বিশারদ আলীর স্ত্রী। তবে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে তার অন্য ছেলেদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
বাগাতিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) স্বপন কুমার চৌধুরী জানান, বৃদ্ধা মাকে আটকে রাখার ঘটনাটি এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ ঘঢ়টনাস্থলে গিয়ে তালাবদ্ধ অবস্খায় হাজেরা বেওয়াকে দেখে উদ্ধার করেন। এসময় তিনি ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করতে দেখে তাকে খাবার এনে দেয়া হয়।
এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা জানান, স্বামী বিশারদ আলী মারা যাওয়ার পর স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধ হাজেরা বেওয়া। এরপর থেকে চার ছেলে সন্তানের মধ্যে তিনি ছোট ছেলের আক্তারুজ্জামানের বাড়িতে থাকতেন। অন্যরা সবাই তাদের মায়ের খাওয়া দাওয়ার খরচ দিতেন। শনিবার সকালে জমি নিয়ে মেজভাই মজিদের সাথে আক্তারের তুমুল কথাকাটাকাটি হয়। এসময় তারা আক্তারকে মারপিটের হুমকি দেয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে আক্তার মাকে ঘরে তালাবদ্ধ করে সস্ত্রীক অন্যত্র চলে যান। বেলা গড়িয়ে বিকেল হলেও খাবার না পেয়ে ক্ষুধার্ত হাজেরা বেওয়া ছটফট করতে থাকেন। এসময় প্রতিবেশীরা দেখতে পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দেবী পালকে জানালে তিনি পুলিশ পাঠান। পরে পুুলিশ তালা ভেঙ্গে বৃদ্ধা হাজেরা বেওয়াকে উদ্ধার করে ও খাবার দেয়।
এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে তার বড় ভাই বাচ্চু মিয়া বলেন, জমি নিয়ে আক্তারের সাথে অপর ভাই মজিদের কথা কাটাকাটি হয়। তবে তার(বাচ্চু) সাথে আক্তারের কোন দ্বন্দ্ব নেই।
ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে তার অন্য ছেলেদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। তারা পরবর্তীতে এমন কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন তদারকি করবে বলে তিনি জানান।