নাটোর অফিস॥ ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় উজান থেকে আসা ঢল এবং বৃষ্টির কারণে পদ্মায় পানি বাড়ছে। ফলে নাটোরের লালপুর চর এলাকায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি মানুষের জন্য তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে নাটোর নর্থবেঙ্গল সুগারমিল এলাকায় পানিতে ডুবে গেছে অনেক আখের জমি। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী মৌসুমে চিনির উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করছে নর্থবেঙ্গল সুগারমিল কর্তৃপক্ষ।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, রাজশাহী পয়েন্টে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত পদ্মার পানি বেড়েছে ৩ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় রাজশাহী পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৪০ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে চারঘাট পয়েন্টে সন্ধ্যা ৬টায় পদ্মার পানি বিপদসীমার ৯০ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। আগামী দুই দিনে পদ্মার পানি রাজশাহী ও চারঘাট পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানিন দ্যূতি জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকেই লালপুর উপজেলার বিলমারিয়া, লালপুর ও ঈশ্বরদি ইউনিয়ন এলাকার পানি বাড়তে শুরু করে। এতে ওই এলাকার অনেক মানুষই নৌকা নিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে চলে গেছেন। অপরদিকে নতুন করে দূরদূরিয়া ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে।
তিনি আরও জানান, ‘যারা এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে তাদের চলাচলের জন্য স্থানীয়ভাবে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বিলমারিয়া ইউনিয়নের পানিবন্দিদের জন্য বিলমারিয়া বালিকা বিদ্যালয়, লালপুর ইউনিয়নের জন্য গৌরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং ঈশ্বরদি ইউনিয়নের পানিবন্দিদের জন্য লালপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়া হচ্ছে। বুধবার সকাল থেকে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে পানিবন্দিদের নিয়ে আসা হবে। অপরদিকে তাদের জন্য উপজেলা প্রশাসনে রিজার্ভ থাকা চাল, ডাল, নুডুলস, তেল, মোমবাতি, ম্যাচসহ শুকনো খাবার সরবরাহ করা হবে। এছাড়া ওই এলাকার মানুষদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারীর নেতৃত্বে প্রতিটি আশ্রয়নকেন্দ্রের বিপরীতে একটি করে মেডিক্যাল টিম কাজ করবে।’এর বাইরে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে চালসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বরাদ্দ পাওয়া মাত্র ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নাটোর নর্থবেঙ্গল সুগারমিলের এজিএম (কৃষি) মাজহারুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকালে তিনি পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আগামী ১ নভেম্বর থেকে নর্থবেঙ্গল সুগার মিলে চিনি উৎপাদন শুরু হবে দাবি করে তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ একর আখের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অবস্থার উন্নতি না হলে নতুন নতুন এলাকার আখের জমি প্লাবিত হবে। যার কারণে আগামী চিনি মৌসুমে চিনির উৎপাদন কমে যেতে পারে।’