নাটোর অফিস॥
ভারত থেকে পেয়াজ রপ্তানী বন্ধের সিদ্ধান্তে নাটোরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে পেঁয়াজের দাম। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে নাটোরে পেয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০টাকা। জেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আবাদকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত নলডাঙ্গা ও গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে পেয়াজের দামে এমন তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে। পাইকারী ও খুচরা দামের পার্থক্যও বেশ। প্রতিদিন একটু একটু করে পেয়াজের দাম বাড়ায় ভোক্তাদের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে। তবে পেঁয়াজ মজুতকারীরা দাম বৃদ্ধির সুযোগে কয়েকগুণ মুনাফা তুলে নিয়েছেন।
আজ সোমবার(৩০শে সেপ্টেম্বর) সর্বোচ্চ দামে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাচকৈর মোকামে। এদিন মণপ্রতি পাইকারী ৪১০০ টাকা, খুচরা ৪৮০০টাকা এবং কেজিপ্রতি ১২০টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। বাজারে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০টাকা। এছাড়া নলডাঙ্গা বাজারে মণপ্রতি পাইকারী ৩৪০০টাকা, খুচরা ৩৮০০টাকা এবং কেজিপ্রতি ৯৫টাকা দরে, নাটোর সদরে মণপ্রতি পাইকারী ৩০০০টাকা, খুচরা ৩৬০০টাকা এবং কেজিপ্রতি ৯০টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মাত্র এক দিন আগে গতকাল (২৯শে সেপ্টেম্বর) পেঁয়াজের খুচরামূল্য গুরুদাসপুরে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা, নাটোর সদরে ৭০টাকা ও নলডাঙ্গায় ৮০টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। অর্থ্যাৎ, একদিনের ব্যবধানে তিন উপজেলার বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০টাকা করে। এতে ভোক্তাদের মধ্যে নাভিশ্বাস উঠেছে।
গুরুদাসপুর উপজেলার চাচকৈর মোকামের পেঁয়াজের বেপারি উজ্জল শেখ বলেন, এক মাসের মধ্যে ৪০ টাকার পেঁয়াজ ৮০ টাকা থেকে বর্তমানে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মোকামে পাইকারী ১০০ টাকা কেজি।
নাটোর সদরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আয়েজ আলী বলেন, সোমবার প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৯০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা শনি ও রোববার ৭০টাকা করে বিক্রি হয়েছে। তবে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে বিক্রি কমে গেছে।
নলডাঙ্গা হাটের আড়তদার সেলিম রেজা ও গোলাম মোস্তফা বলেন, বড় মোকাম হওয়ায় এখানে বেশিরভাগ পেঁয়াজ পাইকারী কেনাবেঁচা হয়। খুচরা ও পাইকারী দামের ব্যবধান ৪শ’ থেকে ৫’শ টাকার বেশি নয়। তবে অনান্য স্থানের তুলনায় কম মূল্যেই এখানে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলাজাতীয় এ ফসলের দাম হু হু করে বেড়ে যাওয়ায় হিমসিম খাচ্ছেন ভোক্তারা। তারা পেয়াজের ক্রয়ের পরিমাণও কমিয়ে দিচ্ছেন।
নাটোর স্টেশন বাজারের ক্রেতা আবুল হোসেন জানান, হঠাৎ করে পেঁয়াজের বাড়তি দাম তাদের চিন্তায় ফেলেছে। একসপ্তাহ আগে যে পেঁয়াজ ৪০টাকা কেজি ক্রয় করেছেন, সে পেঁয়াজ এখন কিনতে হচ্ছে প্রতিকেজি ৯০টাকা। তাই এখন হিসেব করে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে।
কনজুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বাগাতিপাড়া শাখার যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আল আফতাব খান সুইট বলেন, যদিও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি এই মুহূর্তে জাতীয় সমস্যা তবুও অনান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর ক্রমবর্ধমান বাজার দর নিয়ে প্রশাসনের কোনরকম মনিটরিং ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া টিসিবি জেলা পর্যায়ে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছে না। ভোক্তারা বরাবরই অসহায় সামগ্রিক উৎপাদন, বন্টন ও বিক্রয় ব্যবস্থার কাছে। ভোক্তাদের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি মনিটর ও মজুদের মাধ্যমে কৃত্তিম সংকটের দূর করতে আহ্বান জানাই।