নাটোর অফিসঃ
নিম্নমানের কাজে বাধা দেওযায় নাটোরে লিটন আহমেদ খান নামে সওজের এক সহকারী প্রকৌশলীকে ধাওয়া করেছে ঠিকাদারের লোকজন। এসময় ঠিকাদার আশফাকুল ইসলাম, ওই প্রকৌশলীকে কাজের জায়গায় আসলে তাকে মেরে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এঘটনায় বুধবার সকালে সওজের সহকারী প্রকৌশলী লিটন আহমেদ খান নিরাপত্তা চেয়ে বাগাতিপাড়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বর্তমানে নিরাপত্তার অভাবে সহকারী প্রকৌশলী লিটন আহমেদ খান বুধবার ওই কাজে পরিদর্শনে যাননি।
সূত্র জানায়, বাঘার আড়ানী এবং বাগাতিপাড়া উপজেলায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য রাস্তা নির্মাণ করছে নাটোর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। যার ব্যায় ধরা হয়েছে ১৬কোটি টাকা। আর ওই সড়কটি নির্মাণ কাজ করছেন নাটোরে ঠিকাদার আশফাকুল ইসলাম।
থানায় দায়েরকৃত জিডি সূত্রে জানা যায়, ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ওই সড়কে প্রাইম কোট দেওয়া নিয়ে সহকারী প্রকৌশলী লিটন আহমেদ খানের সাথে ঠিকাদার আশফাকুল ইসলামের কথা কাটাকাটি হয়। এসময় ঠিকাদার আশফাকুল ইসলাম প্রকৌশলীকে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং তার লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এসময় সহকারী প্রকৌশলীকে ঠিকাদারের লোকজন ধাওয়া দিলে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসেন তিনি। পরে বিষয়টি সওজের উদ্ধর্তন এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
সহকারী প্রকৌশলী লিটন আহমেদ খান বলেন, আড়ানি-বাগাতিপাড়া সড়কের ঠিকাদার আশফাকুল ইসলাম ও তার লোকজন প্রাইম কোটের আগে কার্পোটিং করতে চায়। এসময় মালামালের গুণগত পরীক্ষা করে তারপর কার্পোটিং করার কথা বলা হয়। কিন্তু সে কোন কথা না শুনেই আমাকে ধাওয়া করে এবং প্রাণে মেরে ফেলার জন্য হুমকি দেয়। বর্তমানে নিরাপত্তার অভাবে আমি কাজের সাইডে যেতে পারছি না। বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তবে ঠিকাদার আশফাকুল ইসলাম বলেন, প্রকৌশলীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে তাকে কোন মারপিট বা ধাওয়া করা হয়নি। সে যে কোন উদ্দ্যেশ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচেছ। ঠিকাদার আরও বলেন, ওই প্রকৌশলী আমাকে নিয়মিত বিরক্ত করে আসছে। বিভিন্ন তালবাহানায় সময় কালক্ষেপন করে কাজের গতি কমিয়ে দিচ্ছে। তবে কোন নিম্নমানের কাজ করা হচেছ না।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী আকতার হোসেন এমন অভিযোগ করা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, কালক্ষেপন নিয়ে ঠিকাদারের সাথে শুধু কথাকাটাকাটি হয়েছে। প্রকৌশলীকে ধাওয়া বা গালমন্দ করা বা অস্ত্র প্রর্দশনের মত কোন ঘটনায় ঘটেনি। সওজের প্রকৌশলীর কালক্ষেপনের কারনে ঠিকাদার বিপুল পরিমান অর্থের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সে বিষয় নিয়েই দুজনার মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। যা শালিনতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পর্ন বানোয়াট,অতিরঞ্জিত এবং মিথ্যাচার করে সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে। ঘটনার পর উভয় পক্ষই ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। সেখানে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সওজ প্রকৌশলী কেন এমন মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন তা বোধগম্য হচ্ছেনা।
নাটোরের নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আফতাব হোসেন বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী দেশের বাহিরে রয়েছেন। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফিরলে পরবর্তীতে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানার পর পরই পুলিশ পাঠানো হযেছিল। বুধবার ওই প্রকৌশলী নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছেন। জিডির তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।