প্রতিনিধি, বড়াইগ্রাম॥
নাটোরের বড়াইগ্রামে ১৪ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে একই স্কুলের শিক্ষক বিয়ে করার ঘটনায় দ্ইু সহযোগী সহ প্রধান কাজীকে আটক করেছে পুলিশ। অপরদিকে ওই ছাত্রীকে নিয়ে স্কুল শিক্ষক লাপাত্তা। তাদের খোঁজ কেউ দিতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আটককৃতদের জিজ্ঞাবাসাদের পর প্রধান কাজী মওলানা গিয়াসউদ্দিন আযমকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং তার অধীনস্থ বিয়ের কার্য সম্পাদনকারী কাজীর সহযোগী আলাউদ্দিন আলীকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এসময় ওই কাজীর অপর সহযোগী চাঁদ মোহাম্মদকে ভুয়া রেজিস্ট্রার ব্যবহার করার দায়ে তার বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
এর আগে সকালে থানায় উপস্থিত হয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুর রউব বাদী হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, কাজীর সহযোগী আলাউদ্দিন আলী ও স্কুল ছাত্রীর পিতা আজিম খলিফাকে আসামী করে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। শিক্ষক সাইফুল ইসলাম (২৭) উপজেলার জোনাইল এম এল উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক ও দারিকুশি গ্রামের মৃত আব্দুর রহিম ভূঁইয়ার ছেলে ও স্কুল ছাত্রী (১৪) পাশ্ববর্তী চর গোবিন্দপুর গ্রামের আজিম খলিফার মেয়ে।
বুধবার দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ই্উএনও) মো. আনোয়ার পারভেজের নেতৃত্বে থানা পুলিশ সরেজমিনে স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও ছাত্রীর বাড়ি যায়। তবে তার আগেই প্রশাসন ও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়িতে তালা লাগিয়ে দুই পরিবারের সকলে পালিয়ে যায়।
পরে ইউএনও বিয়ে কার্য সম্পাদনকারী অভিযুক্ত কাজী মওলানা গিয়াসউদ্দিন আযম, তার সহযোগী আলাউদ্দিন আলী ও চাঁদ ব্যাপারীকে আটক করার নির্দেশ দিলে পুলিশ সন্ধ্যায় তাদেরকে জোনাইল এলাকা থেকে আটক করে।
গত রবিবার (৩ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে একান্ত নিকট আতœীয়দের সাথে নিয়ে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। জানা যায়, ক্লাশ নিতে গিয়ে শিক্ষক সাইফুলের নজর পড়ে ওই ছাত্রীর প্রতি। এরপর প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ছাত্রীটির পিতার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। শিক্ষিত ছেলে ও শিক্ষকতা করছেন এমনটা ভেবে মেয়ের অমতেই সাইফুল ইসলামের সাথে জোর করে বিয়ে দেয়া হয় তাকে। গত ৬ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে নব বাল্যবধূকে ঘরে তোলার কথা ছিলো। কিন্তু গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে সব আনুষ্ঠানিকতা ভেস্তে যায়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, সহযোগী দুই কাজীকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে ও প্রধান কাজীকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও মেয়েটির পিতাকে আটকের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আনোয়ার পারভেজ জানান, একজন স্কুল শিক্ষকের এমন অনৈতিক কান্ড দুঃখজনক। এ ঘটনার জন্য দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি পাওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।