নাটোর: বছরের পর বছর ধরে নাটোরের চকৈবদ্যনাথের দুই শতাধিক ব্যবসায়ীর চামড়া বিক্রির টাকা অনাদায়ী অবস্থায় রাজধানীর ট্যানারী মালিকদের কাছে পড়ে রয়েছে। ব্যবসায়ীদের সংগঠন চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের হিসেব মতে, গত কোরবানীর পর থেকে এখন পর্যন্ত ট্যানারদের কাছে ব্যবসায়ীদের পাওনা অর্ধশত কোটি টাকা। তবে বাস্তবে এই টাকার পরিমাণ শতকোটিরও বেশি। এবারও পাওনা টাকা আদায়ের উপর নির্ভর করছে আসন্ন ঈদে কাঁচা চামড়ার কেনা-বেচা।
সম্প্রতি চকবৈদ্যনাথ চামড়া মোকাম ঘুরে জানা গেছে এ বছরের চামড়া সংগ্রহের হাল-চাল। মোকামের প্রায় প্রতিটি ঘরের সত্বাধিকারীরাই থুবই কম পাওনা টাকা আদায় করত পেরেছেন ঈদের আগে।
তবে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের কাছে আদায়কৃত টাকার পরিমাণ নিয়ে তারা কথা বলতে চান না। তাদের দাবী, কোন ট্যানার তাদের পাওনা বাবদ বকেয়া টাকা পরিশোধ করছে না এমন সংবাদ প্রকাশিত বা দৃষ্টিগোচর হলে বকেয়া টাকা আদায় বিলম্বিত হয়। তবে তারা জানান, আদায়ের হার মোট বকেয়ার ১০ থেকে ২৫ বেশী নয়।
চামড়া ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে পেমেন্টের হার অতি নগণ্য। এবার ঋণ করে চামড়া ক্রয় না করলে ব্যবসায় করা মুশকিল হবে।’
নওগাঁর ধামইরহাটের মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, তিনি দুইদিন ধরে বকেয়া টাকা আদায়ের অপেক্ষায় নাটোর মোকামে অবস্থান করছেন। টাকা আদায় হলেই এলাকায় ফিরে যাবেন।
চামড়া ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল আলম হিরু বলেন, ‘যে কোন বছরের চেয়ে এবার পেমেন্টের অবস্থা খুবই খারাপ। শুধু ব্যবসার স্বার্থে আমাদের ধার-কর্জ করে চামড়া কিনতে হবে।’
চামড়া ব্যবসায়ী হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘পাওনা টাকার পরিমাণ বছর বছর বেড়েই চলেছে। যে হারে পাওনা টাকা বাড়ে তার অর্ধেক হারেও পরিশোধ হয় না। বছরের অনান্য সময় এটি মেনে নেয়া গেলও ঈদে ব্যবসার মৌসুমে টাকা আটকে থাকলে ব্যবসায় করা দুরুহ হয়ে পড়ে। এবার পরিস্থিতি ব্যতিক্রম না।’
জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন, নাটোর মোকামের ব্যবসায়ীদের ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঢাকায় বকেয়া হয়ে পড়ে আছে। খুব কম ব্যবসায়ী অল্প পেমেন্ট পেয়েছেন। সময়মতো এ টাকা না পেলে অধিকাংশ ব্যবসায়ী এবার চামড়া কিনতে পারবেন না। চামড়া না কিনলে দাম কমে তা পাচারের আশংকা থেকে যায়।