নাটোর: নাটোরে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। কিন্তু মশা নিধনে নাটোর পৌরসভা এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। মশা নিধনের জন্য বহু আগেই একটি ফগ মেশিন কেনা হলেও রি-এজেন্টের অভাবে তা ব্যবহার করা হয় না। পৌরসভার ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় তা মশা উত্পাদনের খামারে পরিণত হয়েছে। ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৮৬৯ সালে নাটোর পৌরসভা স্থাপিত হয়। দেশের প্রাচীন এই পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হলেও নাগরিক সুবিধা বাড়েনি। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও ড্রেনেজব্যবস্থার কারণে এটি ময়লা-আবর্জনার শহরে পরিণত হয়েছে।
কান্দিভিটার বাসিন্দা সাংস্কৃতিককর্মী সাজিদ আলী ঝর্ণা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি পৌরসভার আয়তন বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি নাগরিক সুযোগ-সুবিধা। অপ্রশস্ত রাস্তা, ছোট ছোট ড্রেন ও পৌরসভার অভ্যন্তরে জলাধার ভরাট করে ফেলায় নর্দমার শহরে পরিণত হয়েছে নাটোর। ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফলে মশা-মাছি উত্পাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে ড্রেনগুলো। অন্যদিকে সামান্য বৃষ্টি হলেই ড্রেন উপচে পানি পড়ছে। শহরজুড়ে নোংরা পানির জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি রনেন রায় বলেন, মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা পৌর কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। কারণ জনস্বাস্থ্য, সংক্রামক ব্যাধির প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, পরিবেশ দূষণরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া পৌরসভার দায়িত্ব ও কর্তব্য ।
নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। এডিস মশা মূলত পরিষ্কার বদ্ধ পানি ও এসির পানিতে বংশবিস্তার করে। সুতরাং বাড়ির চারপাশে নোংরা-আবর্জনা পরিষ্কার, আগাছা কেটে ফেলাসহ মশা যাতে বংশবিস্তার করতে না পারে সে বিষয়ে নাগরিকদের ভূমিকা রাখতে হবে। একই সঙ্গে পৌরসভার ডাস্টবিনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
এ বিষয়ে নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী বলেন, ড্রেনেজ সিস্টেম নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু নাগরিকরা সচেতন না হলে সম্পূর্ণভাবে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। কারণ, পলিথিনসহ বাসাবাড়ির আবর্জনা অনেকেই ড্রেনে ফেলে। ফলে পানি চলাচল ব্যাহত হওয়াসহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পৌর মেয়র আরো বলেন, বর্তমানে তিনি সরকারি কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। মশা নিধনে কী করা যায় সে ব্যাপারে পৌরসভার সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।