জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, নাটোর॥
নাটোরে চলতি মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে এবার একশ কোটি টাকার আম কিনবে প্রাণ। চলতি মৌসুমে এই শত কোটি টাকায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন আম কেনার লক্ষমাত্রা নিয়ে দেশের সর্ববৃহৎ কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ এ্যাগ্রো লিমিটেডে এর নাটোর কারখানায় ইতোমধ্যে আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শহরতলির একডালা এলাকায় অবস্থিত প্রাণ এগ্রো লিঃ এর কারখানায় এসব আম প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে ম্যাংগো ড্রিংক, ম্যাংগো বার ও জেলি সহ বিভিন্ন উৎপাদিত খাদ্য সামগ্রী বাংলাদেশে বিপণন সহ বিশ্বের ১৩৪টি দেশে রফতানিও করা হচ্ছে।
সোমবার দুপুরে প্রাণ কারখানা মিলনায়তনে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রাণ এগ্রো লিঃ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হযরত আলী বলেন, নাটোরে প্রাণ এর কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠার কারণে সরাসরি প্রায় সাত হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আমের মৌসুমে বাড়তি আরও দুই থেকে তিন হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এসব শ্রমিকের প্রায় ৯০ ভাগ নারী। ম্যাংগো ড্রিংক, জুস,ম্যাংগো বার, জেলি, আচারসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি করতে প্রতি বছরের মতো এবারও ২৮ মে থেকে আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কার্যক্রম চলবে আমের সরবরাহ থাকা পর্যন্ত চলবে ।
তিনি আরও জানান ফ্যাক্টরিতে আম প্রবেশের সময় কোয়ালিটি কন্ট্রোলার দ্বারা আম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তা গ্রহণ করা হয়। প্রথমে আমগুলো পাকা কি-না তা দেখা হয়, পোকা-রোগমুক্ত এবং পঁচা কি না তা পরীক্ষা করা হয়। এরপর ফরমালিন, ব্রিক্স, পি-এইচসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। আম নেওয়ার সময় আরেকটি জিনিস লক্ষ্য করা হয় তা হলো আমের ওজন। ল্যাব টেস্টে উত্তীর্ণ হলেই কেবল তার আম ফ্যাক্টারিতে প্রসেসের জন্যে নেওয়া হয়। এই আম ফ্যাক্টরিতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রাসিং করে পাল্প সংগ্রহ করে তা অ্যাসেপটিক প্রযুক্তিতে সংরক্ষণ করা হয়। এই পদ্ধতির সুবিধে হল হিমায়িতকরণ ছাড়া কমপক্ষে একবছরের জন্য পাল্প নিরাপদ, তাজা ও স্বাদ ধরে রাখা যায়।
মতবিনিময় সভায় প্রাণ এগ্রো বিজনেস লিঃ এর সিনিয়র ম্যানেজার কামরুজ্জামান বলেন, নাটোর, রাজশাহী, চাপাই নবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরায় প্রায় ১৬ হাজার চুক্তিবদ্ধ আমচাষীর কাছ থেকে আম সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমচাষীদের সহযোগিতার জন্য উন্নতমানের চারা বিতরণ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও অব্যাহত আছে। ”আমরা প্রাণ কৃষি হাবের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ আমচাষীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছি। স্বল্পমূল্যে উন্নতজাতের চারা প্রদান, সার, কীটনাশক ব্যবহার, রোপন প্রক্রিয়া ও গাছ থেকে আম সংগ্রহ সম্পর্কে আমাদের অভিজ্ঞ ফিল্ড সুপারভাইজারদের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ফলে কৃষকদের কাছ থেকে আমরা উন্নতমানের আম পাচ্ছি। অপরদিকে কৃষকরাও আম বিক্রয়ে পূর্ণ নিশ্চয়তা পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে ৫০ হাজার আমের চারা বিতরন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এজিএম- পিআর কেএম জিয়াউল হক ও প্রাণ এগ্রো লিমিটেড কারখানায় সিনিয়র ম্যানেজার (এডমিন) আবদুল কাদের সরকার সহ কারখানায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং নাটোরে কর্মরত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।