নাটোরঃ রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় বুধবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে তেলবাহী একটি ট্রেনের নয়টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার প্রায় ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও এই জেলার সাথে সকল রুটে রেলযোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হলেও ঢাকা ও খুলনা থেকে রাজশাহীগামী ৩টি ট্রেন নাটোরের আব্দুলপুর জংশন স্টেশনে আটকা পড়ে রয়েছে। কখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে সেই অপেক্ষায় রয়েছেন এসব ট্রেনের যাত্রি সাধারন।
এদিকে দিনাজপুর ও রংপুর সহ উত্তরাঞ্চল থেকে রাজশাহীর মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনগুলোকে আব্দুলপুর জংশন স্টেশন থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে এসব ট্রেনের যাত্রিদেরও অসহনীয় দূর্ভোগসহ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
আব্দুলপুর জংশন স্টেশনে রাজশাহীগামী একাধিক আন্তঃনগর ট্রেন ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে আটকা পড়ে থাকার কারনে স্টেশনের খাবার দোকানগুলোতে ভীড় বেড়েছে। ছোট এই জংশন স্টেশনে খাবারের দোকানও তেমন নেই। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা চড়া দাম হাঁকছেন। দূর্ভোগে সবচেয়ে বেশি নারী ও শিশু যাত্রিদের। যাত্রিদের অনেকেই কয়েক ঘন্টা অপেক্ষার পর নসিমন ,ইজিবাইক,ভ্যান রিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহনে গন্তব্যে রওনা হন। এখানেও যানবাহন চালক-মালিকরা হাতিয়ে নিচ্ছেন স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ ভাড়া।
আমিন হোসেন নামে এক যাত্রি জানান, তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়িতে যাবেন। যশোর থেকে সাগরদারি আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনে এসেছেন বুধবার রাতে। বুধবার বেলা দুটাতেও ছাড়ার কোন সংবাদ নেই। তাই বাধ্য হয়ে ভিন্ন পথে লালপুর হয়ে রাজশাহী যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
আব্দুলপুর স্টেশন মাষ্টার মিজানুর রহমান বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জানান ,রাজশাহীগামী সাগরদারি, সিল্কসিটি ও বনলতা আন্তঃনগর ট্রেন গত রাত থেকে আটকা পড়ে রয়েছে। এসব ট্রেনের অধিকাংশ যাত্রি ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্যবস্থায় গন্তব্যে চলে গেছেন। স্টেশনে কয়েক ঘন্টা যাত্রিদের চাপ থাকলেও সে অবস্থা এখন নেই। এখন প্রতিটি ট্রেনই খালি পড়ে রয়েছে। অনেক যাত্রি আগেই খবর পেয়ে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে নেমে বিভিন্ন পথে ও ব্যবস্থায় গন্তব্যে চলে গেছেন। পার্বর্তীপুর বা দিনাজপুর থেকে রাজশাহীগামী উত্তরা ও বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রি নামিয়ে এই স্টেশন থেকে ফিরে গেছে। আজ সন্ধ্যার পর রাজশাহী রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছেন তারা।
রাজশাহীর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাহিদুল ইসলামের সাথে বুধবার বিকাল ৫টার দিকে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, ৯টা বগির মধ্যে ৬টি সরানো হয়েছে। এখনও তিনটি বগি সরানো সম্ভব হয়নি। উদ্ধার কর্মীরা কাজ করছে। আশা করা হচ্ছে সন্ধ্যার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে।