নাটোর অফিসঃ নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পুলিশের তাড়া খেয়ে বড়াল নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আব্দুল আজিজ (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। শনিবার দুপুরে দয়ারামপুর ইউনিয়নের চন্দ্রখইর এলাকায় বড়াল নদীতে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তার মৃতদেহ পাশের বড়াইগ্রাম উপজেলার রামাগাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে পুলিশ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে শেওলায় জড়িয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে।
নিহত আজিজুল ইসলাম উপজেলার চন্দ্রখইর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সেখের ছেলে। সে রাজ মিস্ত্রির কাজ করে দাবী পরিবার সহ এলাকাবাসীর।
এদিকে পানিতে পড়ে মৃত্যুর খবর পেয়ে দয়ারামপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা গিয়ে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। একই সময় পুলিশও সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয় বলে জানায় ফায়ার স্টেশন কর্মীরা।
অপরদিকে ঘটনার পর স্থানীয় জনগন পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা ২টার দিকে বাগাতিপাড়া থানার পুলিশ চন্দ্রখইর এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান চালানোর সময় আজিজুল ইসলাম পার্শ্ববর্তী বিদ্যুৎ নগর বাজার থেকে ওই পথ দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। এসময় পুলিশ মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকা নিয়ে তাকে চ্যালেঞ্জ করে। কথোপকথনের এক পর্যায়ে আজিজ দৌড়ে পালিয়ে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়া বড়াল নদীতে ঝাঁপ দেয়। খবর পেয়ে দয়ারমপুর থেকে ফায়ার স্টেশন কর্মীরা উদ্ধার কাজের জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়রা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে।
দয়ারামপুর ফায়ার স্টেশনের লিডার রওশন আলী জানান, তারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা মৃতদেহ উদ্ধার করে। তারা ঘটনাস্থলে পৌছার প্রায় একই সময়ে থানার পুলিশের একটি দলও সেখানে উপস্থিত হয়।
নিহতের বড় ভাই রাশিদুল ইসলাম জানান, বাগাতিপাড়া থানা পুলিশের এস আই সাজ্জাদ ও তার সঙ্গে থাকা অপর একজন কনস্টেবল তার ছোট ভাই আজিজুলকে তাড়া দিয়েছিল। ওই তাড়া খেয়েই তার ছোট ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ঘটনার পর স্থানীয় জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নাটোর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়।
এদিকে শনিবার বিকেলে লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
বাগাতিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, নদীর যে স্থান থেকে আজিজুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তা দহের মতো। সেখানে এর আগেও গরু-মহিষ শেওলায় আটকে মারা গেছে। নদী পারাপারের সময় শেওলায় আটকে আজিজুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
পুলিশের তাড়া খেয়ে মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান।