নাটোর অফিসঃ নাটোরে জ্যোতি ছাত্রী নিবাসে কেরোসিন চুলা বিস্ফোরনে অগ্নিদগ্ধ এনএস সরকারী কলেজের তিন ছাত্রীর একজন সানজিদা ইয়াসমিন মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে মারা যায়। নিহত সানজিদা ইয়াসমিন সন্ধা নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বড়বিলশা গ্রামের সাহাবুল ইসলামের মেয়ে ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ দৌলা সরকারী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
লালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আড়বাব ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইছাহাক আলী এই মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সানজিদা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। বার্ন ইউনিটে সে ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়েছে। চুলার আগুনে তার শরীরের প্রায় ৬৫ ভাগ পুড়ে যায়। সানজিদার লাশ এলাকায় পৌঁছানোর পর জানাজা নামাজ ও দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে।
সানজিদার বাবা কৃষক সাহাবুল ইসলাম বলেন, তিনি তার মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন তার মেয়ে একদিন সরকারের বড় কর্মকর্তা হবে। অথচ ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সে চলেই গেল পৃথিবী ছেড়ে।
এনএস সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শামসুজ্জোহা বলেন, সানজিদার অকাল মৃত্যুতে তারা শোকাহত। এই মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন যারা কলেজ হোস্টেলের বাহিরে মেসে থাকে তাদের খবর সব সময় নেওয়া সম্ভব হয় না। মেয়দের কলেজ হোস্টেলে থাকতে বলা হয়েছিল। তাদের জন্য আসনও বরাদ্দ করা হয়। কিন্ত তারা গিয়ে কোন একটি মেসে ওঠে। এ ঘটনায় দগ্ধ শামীমা তার প্রতিবেশী। তার অবস্থাও সংকটাপন্ন। সেও ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শামীমার সুস্থতা কামনা সহ সানজিদার শোকহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন সকালে নাটোর শহরের বড়গাছা এলাকায় আবুল কাশেমের মালিকানাধীন জ্যোতি ছাত্রী নিবাসে অন্য দুই সহপাঠি শামিমা ও ফাতেমাতুজ্জোহার সাথে কেরোসিনের চুলায় রান্না করছিলেন সানজিদা ইয়াসমিন সন্ধা। এসময় হঠাৎ চুলাটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে ওই তিন ছাত্রী একই সাথে দগ্ধ হয়। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে সানজিদা ও শামিমাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সানজিদাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।