নবীউর রহমান পিপলু॥ দিনভর বাড়ির কাজ করেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে নাটোরের আগদিঘা গ্রামের সুমা খাতুন। সদর উপজেলার আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে পরীক্ষায় অংশ নেয় সুমা।
সুমা খাতুন জানায়,পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেলেও উচ্চ শিক্ষা গ্রহনে বাধা হয়েছে দারিদ্রতা। বাড়িতে দিনভর কাজ করে মাত্র দুই ঘন্টা লেখাপড়ার সময় পেয়েছে সে। প্রতিবেশী ও স্কুলের সহপাঠি ও শিক্ষকদের সহায়তায় সুমা খাতুন স্কুলের গন্ডি পেরুতে পেরেছেন। এখন অর্থের অভাবে কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে শংকা দেখা দিয়েছে। উচ্চ শিক্ষা নিয়ে শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন তার। হৃদয়বানদের সহায়তা পেলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ সহ তার স্বপ্ন পুরন হবে। সে তার উচ্চ শিক্ষার জন্য সকল বিত্তবানদের প্রতি আবেদন জানিযেছে।
বাবা ভ্যান চালক শফিকুল ইসলাম মন্ডল ও মা দিনমজুর নাসিমা বেগম মেয়ের ভাল ফলাফলে খুব খুশী। তারা বলেন, দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। দুবেলা পেট ভরে খেতে দিতে পারেননা তাদের,সেখানে মেয়েকে কলেজে ভর্তি করাবেন কিভাবে।
প্রতিবেশী শাহিন হোসেন জানান, সুমার মা-বাবা দিনভর বাহিরে কাজে থাকেন। প্রতিবেশীরাই তার খোঁজ খবর নেয়। স্কুল দুরে হওয়ায় পরীক্ষার সময় প্রতিবেশীদের তাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে ও নিয়ে আসতে হয়েছে।
আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক ও মোমিনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সদ্য যোগদানকারী প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, সুমা খাতুন খুব মেধাবী। সে মানবিক বিভাগ থেকে গোল্ডেন পেয়েছে। দিনমজুর বাবা মায়ের পক্ষে তার লেখা পড়ার খরচ বহন করতে পারতনা। আমরা শিক্ষকরাই তাকে বিভিন্ন সময়ে সহায়তা করেছি। সে খুব মেধাবী। সুযোগ পেলে সে অনেক দুর পর্যন্ত শিক্ষা অর্জন করে দেশের সুনাম বয়ে আনবে। তিনি সুমার সহায়তায় হৃদয়বানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
অন্যদিকে, দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে নাটোরের আগদিঘা গ্রামের শিলা রানী। ৫ বোনে মধ্যে সে চতুর্থ। বাবা আনন্দ প্রামনিক ও মা শান্তি রানী দুজনেই দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। প্রতিবেশী ও স্বজনদের সহায়তায় চলে তাদের সংসার। সহপাঠি ও স্কুল শিক্ষক এবং গ্রামের হৃদয়বানদের সহায়তায় স্কুলের খরচ যোগান হয়েছে। শিলা রানীর ইচ্ছা লেখাপড়া করে শিক্ষক হওয়ার। এখন কলেজে ভর্তি হবে কিভাবে তা নিয়ে দুশ্চিায় রয়েছে সে। বিত্তবানদের সহায়তা ছাড়া তার লেখাপড়া ইচ্ছা স্বপ্ন ভেস্তে যাবে বলে মনে করছে সে।
আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, শিলার বাবা-মা দুজনায় অসুস্থ। শিলার লেখাপড়া করার ইচ্ছা প্রকট। যে খানে প্রতিবেশীদের সহায়তায় চলে তাদের সংসার ,সেখানে তার উচ্চ শিক্ষা গ্রহন বাধা গ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। যদি বৃত্তবানরা শিলার সহায়তা হাত বাড়িয়ে দেন ,তবেই তার লেখাপড়া হবে। তিনি বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শিলাকে সহায়তা করার জন্য।