নাটোর অফিস॥ দুই পরিবহন মালিক সমিতির দ্বন্দ্বের জেরে নাটোরের সিংড়ায় উত্তরাঞ্চলগামী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সিংড়া মোটর মালিক সমিতি। এ নিয়ে পরস্পর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে দুই সমিতি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নাটোর-বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের বাস যাত্রীরা।
জেলা বাস মালিক সমিতির অভিযোগ, নাটোর মালিক সমিতির সিংড়া ও বগুড়াগামী ১২টি মিনিবাস ও ১৫ থেকে ১৮টি বাস সোমবার সকাল থেকে সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আটকে দিয়েছে সিংড়া মোটর মালিক সমিতি।
জানা যায়, গত বুধবার সিংড়া মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমামের মালিকানাধীন সিংড়া এলিগ্যান্স পরিবহনের একটি বাস নাটোর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি শহরের মাদ্রাসামোড়ে আটকে দেয়। কারণ হিসেবে সমিতির কর্তারা জানায়, রাজশাহী ও নাটোর মালিক সমিতির কোনপ্রকার অনুমতি ছাড়াই সিংড়া-নাটোর ও সিংড়া-রাজশাহী রুটে বাস চলাচল শুরু করে সিংড়া মোটর মালিক সমিতি। এরই জেরে পাঁচদিন পর আজ সকালে নাটোর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির বাসগুলো সিংড়ায় আটকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয় সিংড়া মোটর মালিক সমিতি।
তোফাজ্জল হোসেন ও আবুল খায়ের নামের রাজকীয় পরিবহনের দুই যাত্রী সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে অভিযোগ করেন, টিকেট কেটে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলেও সিংড়া বাজারে তাদের গাড়ি থামিয়ে দেন স্থানীয় রোডমাস্টার। পরে তাদের নামিয়ে দেয়া হয়। মাঝপথে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় বাধ্য হয়েই বগুড়াগামী অন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। একইভাবে বগুড়াগামী নাবিলা পরিবহন, জিলানী পরিবহন, ঐশী পরিবহন, জননী পরিবহন, মেহেদী পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি বাস সিংড়ায় আটকে যাত্রী নামিয়ে দেয়া হয়।
নাটোর বাস-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সাগর বলেন, গায়ের জোরে সিংড়ার তথাকথিত মোটর মালিক সমিতি নাটোর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির বাস চলাচল বন্ধ করেছে। সিংড়ার কোন যাত্রীকে নাটোরের বাসগুলোতে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। নাটোর বাস মালিক সমিতি এই আচরণকে প্রশ্রয় দেবো না। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সিংড়া মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার সমিতি কোন বাস চলাচল বন্ধ করেনি। নাটোরের বাসগুলো যাত্রী নামিয়ে স্বেচ্ছায় ফিরে যাচ্ছে। তিনি জানান, তার মালিকানাধীন সিংড়া এলিগ্যান্সের বাস আটকে ও কয়েকটি কাউন্টার বন্ধ করে বাস চলাচল বন্ধের সূত্রপাত করেছে নাটোর বাস মালিক সমিতি। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের নিকট অভিযোগ করেও সাড়া মেলেনি।
এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ বলেন, দুই মালিক সমিতির দ্বন্দ্বের বিষয়টি শুনেছি। তাদের নেতৃবৃন্দকে ডেকে প্রকৃত ঘটনা জেনে বিষয়টি সমাধানের পদক্ষেপ নেয়া হবে।