নাটোর অফিস॥ নাটোরের বড়াইগ্রামে গত তিন দিনে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া দাঙ্গা-হাঙ্গামা তো আছেই। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবস্থা দেখে অস্বস্তি ও উৎকন্ঠায় দিন পার করছে উপজেলাবাসী।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার আহমেদপুর কারবালা এলাকায় দুর্বৃত্তরা রামু চন্দ্র দাস (৩৭) নামে এক ইজিবাইক (অটোরিক্স্রা) চালককে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে তার ইজিবাইকটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সে নাটোর সদর উপজেলার মল্লিকহাটি এলাকার বাবুল চন্দ্র দাসের ছেলে। এর আগের দিন শুক্রবার সকালে উপজেলার কুজাইল গ্রামে এনার্জি ড্রিংকসের সাথে বিষ মিশিয়ে গৃহবধূ নার্গিস বেগম (২৩)কে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে। এরও আগের দিন বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার নগর কয়েনবাজার এলাকায় সত্তোরোর্ধ অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বড়াইগ্রাম থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপ-পরিদর্শক মো.আবু হানিফ জানান, ইলেকট্রিক পণ্য বিক্রেতা অসীম কুমার হাওলাদার রামুর ইজিবাইকে ঘুরে ঘুরে পণ্য বিক্রি করতো। শনিবার সারাদিন বনপাড়া হাটে পণ্য বিক্রি শেষে রাতে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথিমধ্যে ৪/৫ জন দুর্বৃত্ত তাদের ইজিবাইক গতিরোধ করে টাকা ছিনতাই করার চেষ্টা করে। এ সময় রামু বাঁধা দিতে এলে দুর্বৃত্তরা তাকে উপর্যুপরী ছুরিকাঘাত করে মারাতœক জখম করে এবং অসীমের হাত-পা বেঁধে সড়কের পাশে ফেলে রেখে পণ্য বিক্রির প্রায় ৭০ হাজার টাকাসহ ইজিবাইক নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। পরে পেছন দিক থেকে আসা কযেকজন ভ্যান চালক তাদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পথে রামুর মৃত্যু হয়।
উপজেলার কুজাইল গ্রামের আব্দুল কাদের জানান, দাম্পত্য কলহের জের ধরে শুক্রবার সকালে তার মেয়ে গৃহবধূ নার্গিস বেগমকে এনার্জি ড্রিংকসের সাথে বিষ মিশিয়ে হত্যা করে জামাতা শামীম হোসেন। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং ঘটনার পর থেকে শামীম পলাতক রয়েছে।
নগর ইউপি চেয়ারম্যান নিলুফার ইয়াসমিন ডালু জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার নগর কয়েনবাজার এলাকার পাবনা-নাটোর মহাসড়কের পাশে সত্তোরোর্ধ অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
এদিকে গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মাঝগাঁও বাহিমালী এলাকায় গাছ কাটা নিয়ে বিরোধের জের ধরে অজয় গোমেজ (৩৫) নামে এক মুদী দোকানীকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে স্থানীয় চিহ্নিত একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনাতে ৭ জনকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকেই আটক করেনি।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাঝগাঁও তিরাইল এলাকায় আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয় কমপক্ষে ১০জন। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম (৩৮) নামে একজনকে আশংকাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা যায়, আশু গ্রুপ ও করিম গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ ঘটে। এ ব্যাপারে থানায় উভয় পক্ষই লিখিত এজাহার দায়ের করেছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ কুমার দাস ঘটনাগুলোর সত্যতা স্বীকার করে জানান, নাগরিকের নিরাপত্তায় পুলিশ সর্বদাই সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। সব ঘটনাতেই দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।