নাটোর অফিস॥ নাটোরের গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় ধান হাটে কতিপয় ধান ব্যবসায়ীর প্রতারণা শিকার হয়েছেন নুর মোহাম্মদ প্রামানিক (৭৫) নামে একজন গৃহস্থ কৃষক। প্রতারক ব্যবসায়ীরা ওই কৃষকের ১৫মন ধান ওজনে কারচুপি করে প্রতারিত করেছেন। পরে জনরোষে পাঁচ ব্যবসায়ীর চারজন পালিয়ে বাঁচলেও আলাল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী গনধোলাইয়ের শিকার হন।
গত ২৬ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় ধান হাটে ওই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর গ্রামের ওই কৃষক মঙ্গলবার ৫০ কেজির ৩৭ বস্থায় ৪২ মন ধান বিক্রির জন্য চাঁচকৈড় হাটে নিয়ে আসেন। যৌথ কারবারী ব্যবসায়ী আলাল হোসেন, স্বাধীন মোল্লা, হুরমত আলী, নাছির উদ্দিন ও বাবলু হোসেন ওই ধানগুলো ৭০০ টাকা মন দরে কিননেন।
প্রতারণার শিকার হাজি নুর মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, তিনি এলাকার গৃহস্থ কৃষক। আনুমানিক ৪০-৪২ মন ধরে ধানগুলো তাঁর গোলা থেকে ৩৭টি বস্তায় ভরে হাটে এনেছিলেন। কিন্তু ওই ব্যবসায়ীরা তাঁর সাথে প্রতারণা করে ২৭ মন ধরে ১৯ হাজার ৪১০ টাকা তাঁর হাতে ধরিয়ে দেয়। পক্ষান্তরে ৪২মন ধানের বাজার হিসেবে ২৯ হাজার ৪০০ টাকা। কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতিবাদ করলে তাকে নানা ভাবে হয়রানী করে বিদায় করা হয়। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ তাই, চোখ মুছতে মুছতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি।
ওই কৃষকের নাতি ইয়াকুব আলী বলেন, তার দাদার অবস্থা দেখে কারন জানতে চাইলে তার সাথে প্রতারণার কথা জানান তাঁকে। পরে সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেনসহ বাজারের অন্য ব্যবসায়ীদের সহযোগীতায় ওই ধানগুলো শতশত মানুষের উপস্থিতিতে পুনরায় মেপে ৪২ মন ধানের সত্যতা মিলে। এক পর্যায়ে জনরোষ থেকে বাঁচতে পাঁচ ব্যবসায়ীর চারজন পালিয়ে যান। কিন্তু তাদের অন্যতম আলাল হোসেনকে ধরে গনধোলাই দেন উপস্থিত জনতা। পরে আলাল হোসেন নিজের অপরাধ শিকার করেন।
উপস্থিত কমপক্ষে ৩০জন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন,চাঁচকৈড় হাটে ওজনে কারচুপির ঘটনা নতুন নয়। ধানের বাইরেও রসুন, রবিশস্য ও পাট হাটেও প্রতারণার ঘটনা ঘটে চলছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রামের সাধারন কৃষক নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। ফলে চাঁচকৈড় হাটের সুনাম-খ্যাতি নষ্ট হচ্ছে। দুরের কৃষকরা হাট বিমূখ হওয়ায় অন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে।
এদিকে, কৃষকের ধান চুরির ঘটনায় স্থানীয় অন্য ব্যবসায়ীদের সহযোগীতায় কৃষক নুর মোহাম্মদ চাঁচকৈড় হাট-বাজার পরিচালনা কমিটির কাছে অভিযোগ করেছেন।
চাঁচকৈড় হাট-বাজার পরিচালনা কমিটির পরিচালক আনিছুর রহমান মোল্লা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন বিষয়টির সমাধানের জন্য উভয়পক্ষকে ডেকে সমাধানের চেষ্টা চলছে।