নাটোর অফিস॥ পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাঞ্চলীয় বাসভবন নাটোরের উত্তরা গণভবনের মূল নকশা পরিবর্তন করে নতুন স্থাপনা নির্মাণ উদ্যোগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। গতকাল রোববার নাটোরের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা শারমিন পুতুল রিটটি দায়ের করেন। রিটে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নাটোর জেলা প্রশাসকসহ সংশ্নিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে উত্তরা গণভবনের ঐতিহ্য রক্ষায় নতুন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ স্থগিতের পাশাপাশি ভবনের ভেতর ও বাইরে টাঙানো প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ডও অপসারণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে উত্তরা গণভবনকে ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা দিতেও সরকারের প্রতি আদালতের আদেশ চাওয়া হয়েছে।
গত ৬ই মার্চ নাটোর থেকে প্রকাশিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনাটোর২৪ ডটকম ও পরদিন ৭ মার্চ দৈনিক সমকালে ‘উত্তরা গণভবন :ঐতিহ্যে কুঠারাঘাত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গতকাল ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী ফারজানা শারমিন পুতুল।
রিট করার পর তিনি জাগোনাটোর২৪ ডটকমকে বলেন, বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। কার্যতালিকায় এলে আজ সোমবার রিটটি শুনানি হতে পারে।
এই দুই প্রতিবেদনে বলা হয়, নাটোরের উত্তরা গণভবনকে আরও বেশি পর্যটক আকর্ষণীয় করার নামে ভেতর ও বাইরে নতুন স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে গণভবনের ভেতরে ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি থ্রিডি সিনেপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্নিষ্ট প্রকল্পটি পাস না হলেও রাজশাহীর এক ব্যক্তিকে আংশিক কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ড গণভবনের ভেতর ও বাইরে টাঙানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিখ্যাত রাজা দয়ারাম রায়ের শাসনামল, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক এ স্থাপনায় নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে কয়েকশ’ বছরের ঐতিহ্যের বুকে কুঠারাঘাত করা হবে বলে মন্তব্য করেছে স্থানীয় সুধী মহল।
এদিকে রিট দায়েরের প্রেক্ষিতে স্বস্তি প্রকাশ করেছে সুধিমহল। তারা জানায়, ঐতিহাসিক এ স্থাপনা রক্ষায় তারা যে কোন সহযোগিতার জন্য প্রস্তত রয়েছেন।