নাইমুর রহমান, এডিটর ইন চিফ
নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নাটোরের বাজারে এসেছে আম। প্রায় সপ্তাহখানেক আগে থেকে অপরিপক্ব এসব অাম মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে পাকানো। অতিমুনাফার লোভে ইতোমধ্যেই নাটোর শহর ও আশেপাশের উপজেলাগুলোর বিভিন্ন বাজারে আনা হচ্ছে এসব আম। আম উৎপাদনে উত্তরাঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় জেলা রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর এবার নাটোরে আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে বাজারগুলোতে আম সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধে প্রতিটি উপজেলায় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে মঙ্গলবার একটি বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই বৈঠকে অংশ নেন জেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ, তথ্য অফিস, আমচাষী ও সাংবাদিকবৃন্দ।
বৈঠক থেকে জানানো হয়, নাটোরে উৎপাদিত ১২টি জাতের আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্র। ২৫শে জুন থেকে ২৫ শে জুলাই পর্যন্ত এ আম পাড়া অব্যাহত থাকবে। এতে আগামী ২৫ মে থেকে গোপালভোগ আম পাড়বেন চাষীরা। ওইদিন বা তার পর থেকে নাটোরের বাজারে মিলবে গোপালভোগ আম। পরবর্তীতে যথাক্রমে খিরসাপাত ও রাণীপছন্দ ৫ই জুন, ল্যাংড়া, লকনা, নাক ফজলী ১০ই জুন, হাড়িভাঙ্গা ২০ই জুন, আম্রপালী, মল্লিকা ও ফজলী ১০ই জুলাই, বারী(৪) ১৫ই জুলাই এবং সর্বশেষ আশ্বিনা আম ২৫শে জুলাই।
এছাড়া আবহাওয়াজনিত কারণে নির্ধারিত সময়ের ৭/১০ দিন আগেও আম পাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয় ওই উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্রের নির্ধারিত তালিকায়।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে বাজারে আমের সরবরাহ ও রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আমের বিষয়ে কঠোর নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ লক্ষে জেলার সাতটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা সম্বলিত চিঠি প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের জন্য জেলা তথ্য কর্মকর্তাকেও মাইকিংসহ সচেতনতামূলক প্রচারণা কার্যক্রমের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সময়, যে সমস্ত ইটভাটার ধোঁয়া ও তাপের কারণে আমসহ মৌসুমি ফল ব্ল্যাক টিপ রোগে নষ্ট হচ্ছে, সেসব ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান জোরদারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সভায় অনান্যের মধ্য উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাজ্জাকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুনীরুজ্জামান ভুঁঞা, হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক মিফতাহুল বারী, নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জালাল উদ্দীন, সিনিয়র সাংবাদিক নবীউর রহমান পিপলু, সাংবাদিক নাইমুর রহমান, আমচাষী রইস উদ্দীন প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বলেন, আমকে ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত ও ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্যই গাছ থেকে সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্দেশনা না মেনে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।