নাটোর: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী বাছাই নিয়ে আওয়ামীলীগের দুই প্রার্থীর বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা ও মোটর সাইকেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এছাড়া সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করাসহ অনুষ্ঠানস্থলের আসবাবপত্রও ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার তমালতলা এলাকায় স্থানীয় সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুলের সহোদর ওহিদুর রহমান গকুল সমর্থকদের সাথে আবুল সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ ভাংচুরের সত্যতা স্বীকার করলেও মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি জানেন না বলে দাবী করেছে।
দলীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানাযায়, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী বাছাই নিয়ে সোমবার বিকেলে তমালতলা এলাকায় বাগাতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে শুরু হয়। উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবুল হোসেন, সাধারন সম্পাদক সেকেন্দার রহমান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের ছোট ভাই ওহিদুল ইসলাম গোকুলের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় ভোটাভুটির সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে সভা শুরুতেই আবুল হোসেন সমর্থকদের সাথে গকুল সমর্থকদের মধ্যে কয়েকদফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটায় সভাস্থলে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করে। দলীয় নেতা কর্মীদের গোপন ভোটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের পর সেকেন্দার রহমান প্রথম, আবুল হোসেন দ্বিতীয় ও এমপি বকুলের সহোদর ওহিদুল ইসলাম গকুল তৃতীয় হন। এই ফলাফল ঘোষণার পর পরই গকুল সমর্থকরা আবুল সমর্থকদের ওপর চড়াও হয় এবং অনুষ্ঠানস্থলের আসবাব পত্র ভাংচুর করে। এসময় অনুষ্ঠানস্থলের অদূরে রাখা উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আবুল সমর্থক জাফর আলীর মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। পরে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এসময় ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী আবুল কালাম আজাদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। গকুল সমর্থকরা আবুল সমর্থক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শিপনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ সময় পুলিশ আবুল সমর্থক তমালতলা চকহরিপুর গ্রামের তুহিন, মেহেদি হাসান, শ্রাবন ও শিপন নামে চারজনকে আটক করে।
এদিকে ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুকুমার মুখার্জী তিনকড়ি ঠাকুর বলেন, ‘ভোটাভুটি শেষে আগে-পরে বসা নিয়ে একটু উত্তেজনা হয়। তবে জেলা নেতারা বিষয়টি সমাধান করেছেন। ভাংচুর বা অগ্নিসংযোগ হয়নি।’
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তোজা আলী বাবলু বলেন, ‘সোমবার বিকেলে অনেক উৎসুক মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিল। কিন্তু হামলা বা ভাংচুরের মতো ঘটনা ঘটেনি।’
জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি ভোটাভুটি পরিচালনা করেন এবং ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন। এসময় কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে তারা ফিরে আসার পর আগে ভোট দেয়া নিয়ে বিশৃঙ্খলা হয়েছে বলে শুনেছেন, ভাংচুর বা অগ্নিসংযোগ নয়।
বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ ৪ জন আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভোটাভুটি নিয়ে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছে সত্যি কিন্তু কোন ভাংচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।