রাতারাতি সেতুর রেলিং কেটে ব্যবসায়ীদের সিঁড়ি তৈরি, নকশা পরিবর্তনে প্রভাব পরার সংঙ্কা কতৃপক্ষের

নাটোর অফিস।।
নাটোরের সিংড়ায় এলজিডির অর্থায়নে ১৩ কোটি টাকার সরকারী সেতুর রেলিং ভেঙে ইচ্ছে মতো সিঁড়ি নির্মাণ করার অভিযোগ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। আত্রাই নদীর ওপর নির্মিত বিলদহর বাজার থেকে কৃষ্ণনগর গ্রামের সংযোগ সেতুর পশ্চিম রেলিং কেটে উপজেলার বিলদহর গ্রামের ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান বাসার দোতালায় যাওয়ার জন্য সিঁড়ি নির্মাণ করেন আর পূর্ব পার্শে রেলিং কেটে নিজেদের মার্কেটে মালামাল বহনের জন্য নিচে নামার সিঁড়ি নির্মাণ করেন কতিপয় ব্যবসায়ীরা। রাতারাতি রেলিং কেটে সিঁড়ি নির্মানের ফলে সেতুটির সৌন্দর্য এবং মূল নকশা পরিবর্তনের সংঙ্কায় পরেছে এলজিইডি কতৃপক্ষ।
এলজিইডি অফিসসুত্রে জানা যায়, হাতিরঝিলের আদলে আত্রাই নদীর ওপর নির্মিত বিলদহর বাজার থেকে কৃষ্ণনগর গ্রাম পর্যন্ত সংযোগ সেতুটি। এলইিডির অর্থায়নে ২০৮ মিটার সেতুটি প্রায় ১৩ কোটি টাকা নির্মান ব্যয়ে ২০১৮ সালে নির্মান কাজ শুরু করে। সেতুটি চলাচল উপযুক্ত হবার সাথে সাথে কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজেদের সুবিধার্থে রাতারাতি রেলিং কেটে বাসায় যাওয়ার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের সিঁড়ি তৈরি করে। এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হওয়ায় বাধা দিয়েও আটকানো যায়নি।
অন্তত ৬ জন পথচারী এবং ৫ জন গাড়ী চালকদের সাথে কথা বললে তারা দাবি করেন, সেতুটি নির্মানের ফলে প্রায় ১০ টি গ্রামের মানুষের চলাচলের সুদিন এসেছে, এবং সিংড়ার সাথে গুরুদাসপুর উপজেলার মানুষের ব্যবসা-বানিজ্যর জন্য খুব সহজ হয়েছে চলাচল। হাতিরঝিলের আদলে তৈরি সেতুটি অবৈধ ভাবে রাতারাতি সুবিধামতো রেলিং কেটে সেতুটির সৌন্দর্যই নষ্ট করেছে। এলাকাবাসির প্রাণের দাবি অবৈধ সিঁড়িগুলো উচ্ছেদ করে সেতুর মূল সৌন্দর্য় ফিরিয়ে আনার।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের সাথে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে তার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, বাসাটি রেস্টুরেন্ট অথবা ক্লিনিক হিসেবে ভাড়া দেওয়া হবে। বাসাটি সেতুর কাছাকাছি হওয়ায় সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য সিঁড়িটি করা হয়েছে। বাসার দোতলার সাথে নির্মিত সিঁড়িটি ঠিকাদার করে দিয়েছে। তবে নিচতলায় যাওয়ার জন্য সিঁড়ির প্রযোজন নেই নিচে আলাদা রাস্থা আছে। আর রেলিং কাটা হলেও সেতুর কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
পূর্বপার্শে রেলিং কেটে সিঁড়ি তৈরি করা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে মিজবাহ এন্টারপ্রাইজের মালিক ইয়াজিদ আলী জানান, ব্রিজে সহজে উঠার সুবিধার্থে জনগনের সার্থে ব্যবসায়ীরা মিলে করেছি। সিঁড়ি তৈরির ফলে পার্শে খেয়া ঘাটের মানুষেরা সহজেই ব্রিজে উঠতে পারে। তাছারা নিচে দিয়ে ঘুরে গিয়ে উঠতে হতো।
আরেক ব্যবসায়ী ডি আর গৌড়ি জুয়েলার্সের প্রোপাইটর পরিমল সরকার বলেন, ঠিকাদারকে বলেই করা হয়েছে। নিজেদের সুবিধার্থে ১০/১২ জন ব্যবসায়ী মিলেই কাজটি করেছি। এতে ব্রিজের কোন ক্ষতি হয়নি।
কালাম ইনজিয়ারিং ওয়ার্কসপ এর প্রোপাইটর আবুল কালাম বলেন, দোকান মালিকরা মিলে করেছি। ব্রিজের নিচে দিয়ে মার্কেটে যাওয়ার রাস্থা থাকলেও সিঁড়ি করাতে আমাদের খুব উপকার হয়েছে।
সেতু নির্মান ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম জাহানকে ফোন করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কাজ দেখার দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী বিপ্লব হোসেন বলেন, এলাকার লোকজন কোন কথা না শুনেই জোর করে রেলিং কেটে সিঁড়ি তৈরি করেছে। অবৈধভাবে রেলিং কেটে সিঁড়ি নির্মানের ফলে সেতুটির মূল নকশা পরিবর্তন হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ রফিক বলেন, এলাকার কিছু ব্যবসায়ী নিজেরাই রেলিং কেটে সিঁড়ি তৈরি করেছে। এতে আমাদের কোন অনুমতি নেয়নি। রেলিং তৈরি করতে গেলে বাঁধার সৃষ্ঠি করে। তবে সেতুর মূল ট্রাকচার ঠিক আছে। যত্রতত্র রেলিং কেটে সিঁড়ি তৈরির জন্য সেতুর সৌন্দর্য় নষ্ট হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *