নাটোর: নাটোরে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিস্থাপিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রোগ্রামিং ইন সি(৬৬৫৯)বিষয়ের ৩৭১টি উত্তরপত্র জালিয়াতির মূল হোতা মাহমুদুন্নবী মিলনের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন ১৯৮০ এর ৮ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার রাতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মর্তুজা খান বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মাহমুদুন্নবী মিলন নাটোর শহরের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভাগীয় প্রধান। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জালিয়াতির সাথে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।
জানা যায়, বিগত তিন সেমিস্টার ধরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন বিষয়ের উত্তরপত্র প্রতিস্থাপন করতেন শিক্ষক মাহমুদুন্নবী মিলন। এ কাজের জন্য পরীক্ষার্থী প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে নিতেন তিনি। আগ্রহী পরীক্ষার্থীরা এ টাকার বিনিময়ে পাশের নিশ্চয়তা পেত। টাকা প্রাপ্তির পর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীর নিকট থেকে পাঁচ হাজার টাকায় ১০০টি করে ফাঁকা উত্তরপত্র কিনতেন তিনি। পরীক্ষার আগের দিন ফাঁকা উত্তরপত্রের তথ্যবহুল প্রথম পৃষ্ঠার শিক্ষার্থীর অংশটুকু ছিড়ে পরীক্ষার্থীদের দিতেন মাহামুদুন্নবী। পরীক্ষার নির্দিষ্ট সময় শেষের কিছু পূর্বে মূল উত্তরপত্রের প্রথম পৃষ্ঠার শিক্ষার্থীর অংশটুকু ছিড়ে নিয়ে আগের দিন সরবরাহকৃত অংশটুকু কৌশলে উত্তরপত্রের ভেতরে রেখে দিতো পরীক্ষার্থীরা। ওই রাতেই শিক্ষক মাহমুদুন্নবী আসল উত্তরপত্র সরিয়ে দিতেন এবং পরীক্ষার্থীর আনা ‘শিক্ষার্থীর অংশটুকু’ নিজের কাছে রেখে ফাঁকা উত্তরপত্র শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। পরদিন উত্তরপত্র লেখা হলে আসল উত্তরপত্রের পরিবর্তে সেগুলোই বোর্ডে পাঠাতেন এবং একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সেই খাতাগুলো আবার নাটোরেই ফিরে আসত।
তবে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান টুটুল দাবী করেছেন, মাহমুদুন্নবী তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নন। প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করতে মাহমুদুন্নবী তার প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করছেন।
নাটোর সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মোঃ আবু সিদ্দিক মামলাটির তদন্ত করছেন। তিনি বলেন, শিক্ষক মাহমুদুন্নবী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উত্তরপত্র জালিয়াতির কথা স্বীকার করেছেন। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এ মামলাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ০৯ জানুয়ারী নাটোর শহরের বলারীপাড়া এলাকা থেকে ৩৭১টি উত্তরপত্রসহ স্থানীয় ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির শিক্ষক মাহমুদুন্নবীকে আটক করে পুলিশ।