নাটোর অফিস॥
নাটোরের গুরুদাসপুরে ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ ও গলা টিপে হত্যার দায়ে মোঃ সাকিব (২৪) নামে এক কিশোরকে শিশু আইনে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বেলা ১১ টার সময় নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন। এসময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিল। ঘটনার সময় আসামীর বয়স ছিল ১৬ বছর। দন্ডপ্রাপ্ত সাকিব জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বালসা গ্রামের মোঃ মিলনের ছেলে।
নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের মিয়া জানান, ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে গুরুদাসপুর উপজেলার বালসা গ্রামের মনিরুল ইসলামের শিশু কন্যা খাদিজা খাতুন আপন চাচা মিলনের বাড়িতে টেলিভিশন দেখার জন্য তাদের ঘরে প্রবেশ করে। সে সময় তার চাচাতো ভাই সাকিব একাই ওই ঘরে বসে টেলিভিশন দেখছিল। সে সময় বাড়িতে পরিবারের অন্য কেউ ছিল না। এ অবস্থায় শাকিব চাচাতো বোন খাদিজাকে একা পেয়ে মুখে গামছা বেধে জোড়পুর্বক ধর্ষন করে। এতে রক্তক্ষরন হয়ে অসুস্থ্য পড়ে খাদিজা। এ অবস্থায় সাকিব ভীত হয়ে খাদিজাকে গলা টিপে হত্যা করে। পরে তার বাবা-মাকে বিষয়টি খুলে বলে এবং তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী খাদিজার মরদেহ একটি প্লাষ্টিকের বস্তায় ভরে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। অন্যদিকে খাদিজার মা-বাবা, আত্মীয় স্বজন খোঁজাখুজি শুরু করেন। সেময় তারাও খোঁজাখুজিতে অংশগ্রহণ করেন। খাদিজার সন্ধান না পেয়ে ২১ ডিসেম্বর বাবা মনিরুল ইসলাম ওরফে মধু গুরুদাপুর থানায় সাধারন ডায়রী করেন। আর শাকিব ও তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তারা রাতের আধাঁরে বাড়ির পাশে একটি দীঘিতে মরদেহটি ফেলে দেয়। অর্থাৎ ঘটনার দইুদিন পর ২২ ডিসেম্বর খাদিজার বস্তাবন্দী মরদেহ পাশের দিঘী থেকে উদ্ধার করেন পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মনিরুল বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ময়না তদন্তে শিশুকে ধর্ষনের পর হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযানে নেমে মিলন হোসেনের ছেলে সাকিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাকিবের স্বীকরোক্তি ও তথ্য প্রমান, ডিএনএ পরীক্ষা এবং দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরে আলম সিদ্দীকি ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জসীট দেন। ওই মামলার দীর্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালতের বিচারক আজ এই রায় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ঘটনার সময় দন্ডপ্রাপ্ত সাকিবের বয়স ছিল ১৬ বছর। তাই বিচারক শিশু আইনে তাকে এই আটকাদেশ দেন।