নাটোর অফিস।।নাটোরের সিংড়া উপজেলা অংশের নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পাশে কৃষি জমিতে গড়ে তোলা তিনটি ইট ভাটার অবৈধ বাঁধ অপসারন করেছেন ইউএনও। উপজেলার পাঁচবাড়িয়া খালের মুখে আ’লীগ নেতার তৈরি ইট ভাটায় যাতায়াতের জন্য সড়ক ও জনপদের খালের ওপর পানির প্রবাহ বন্ধ করে নির্মান করেন এই বাঁধ। এতে চলনবিলের প্রায় ২৭০০ বিঘা কৃষি জমির এক যুগের জলাবদ্ধার নিরসন ঘটবে বলে আশা করেন স্থানীয় কৃষকরা। বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ভেকু দিয়ে বাঁধগুলো অপসারণ করা হয়। এছাড়াও ওই খালের ওপর তৈরি করা আরো তিনটি বাঁধ অপসারণে ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন ইউএনও।উপজেলা প্রশাসন ও কৃষক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের শেরকোল ও পাঁচবাড়িয়া এলাকায় সড়ক ও জনপদের খালের পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করে ভাটার মালামাল বহনের জন্য বাঁধ দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস সহ তিনজন ইট ভাটার মালিক। ফলে শেরকোল পাঁচবাড়িয়া, আগপাড়া, মাঝপাড়া, খাগোরবাড়িয়া, মাদারীগ্রাম, নিওগিরগ্রামের প্রায় ২৭০০ বিঘা ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে আসছিল। প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক তাদের রবিশস্য ও বোরো ধান চাষাবাদ বিঘিœত হচ্ছিল।স্থানীয় কৃষক আব্দুল করিম জানান, কৃষি জমির মাঝে ইটভাটা গড়ে তোলায় এলাকার মানুষ স্থাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। তাছাড়া খালের মুখে আ’লীগ নেতাদের বাঁধ নির্মাণে ছয় গ্রামের ৫ শতাধিক কৃষকের দুর্ভোগে ছিল। কৃষকের অপূরনীয় ক্ষতি হলেও ভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেহ প্রতিবাদ করা বা কথাও অভিযোগ দেওয়ার সাহস পায়নি। দীর্ঘ দিন পর হলেও প্রভাবশালীদের সেই বাঁধ অপসারণে কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশার অবসান ঘটবে।
পরিবেশবাদী সংগঠন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিরি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, চলনবিলে কৃষি ও কৃষকের ফসলি জমির পানি নিষ্কাসন ও সেচ সুবিধার জন্য অসংখ্য সরকারি খাল ও জলাভূমি রয়েছে। খাল ও জলাভূমিগুলো দখলমুক্ত হলে বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষিত হবে। প্রশাসনের এমন সাঁড়াশি অভিযানে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন ঘটবে বলে মনে করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে সড়ক ও জনপদের খালে অবৈধ ভাবে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করে ভাটা মালিকরা তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। ফলে তিন ফসলী প্রায় ২৭০০ বিঘা জমি জলাবদ্ধতা হয়ে কৃষকের চাষাবাদে বিঘœ ঘটছিল। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ইট ভাটার সেই বাঁধগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। পানি নেমে গেলেই কৃষকদের সমস্যার সমাধান হবে। ভাটার মালিকদেকে বলে দেওয়া হয়েছে খালের পানি চলাচলের ব্যবস্থা করার পরেই তারা ভাটা চালু করতে পারবে। প্রাকৃতিক খাল ও জলাশয়ের পানির প্রবাহ কেহ বাঁধাগ্রস্থ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।