নাটোরের ভাষা সৈনিক ফজলুল হক ইন্তেকাল করেছেন

নাটোর অফিস।।
নাটোরের ভাষা সৈনিক ফজলুল হক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহির রাজেউন) । সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে নানা দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছিলেন।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। প্রয়াত সৈনিক ফজলুল হকের ছেলে ওয়াসিফ-উল-হক মৃত্যুর বিষয়ট নিশ্চিত করে জাজান , আজ মঙ্গলবার বাদ জোহর নাটোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে (পুরাতন কাচারি মাঠ) জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
মরহুম ফজলুল হক ফজলুল হক নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার দমদমা গ্রামে ১৯৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জেলা বোর্ডের সেকশন অফিসার হিসেবে সরকারি চাকরি করেন। অবসর গ্রহণের পর ফজলুল হক নাটোর শহরে ওষুধ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি নাটোর ইউনাইটেড মেডিকেল হলের স্বত্বাধিকারী ছিলেন। তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে সহ অসংখ্য সজন ও গুনগ্রাহি রেখে যান।
পরিবার সুত্রে জানাযায়, ১৯৫২ সালে নবম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় মাতৃভাষা বাংলার জন্য রাজপথে নেমে আন্দোলনে শরীক হন ফজলুল হক। বর্তমানে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের (তৎকালীন জিন্না মডেল হাই স্কুল) শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করেন। এছাড়া স্থানীয় অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগান দিয়ে শহরে মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন তিনি। এই আন্দোলনে অংশ নেয়ার জন্য ফজলুল হককে হুলিয়া মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে।
এই বয়সে এসে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাড়িতেই সময় কাটতে হয়। নাটোর জেলায় যে কজন ভাষা সৈনিক ছিলেন, তাদের মধ্য ফজলুল হকই শুধু জীবিত ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছরেও রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি পাননি এ গুণী ব্যক্তি। তবে ভাষা আন্দোলনে অনন্য ভূমিকা রাখায় ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত নাটোর সরকারি বালক বিদ্যালয় শতবর্ষ উৎসবে তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *