নাটোর অফিস ।।
নাটোরের সিংড়ায় হামলা করে বিএনপি নেতা জাকির হোসেন কে কুপিয়ে হত্যা ও আড়াইশ গাড়ি ভাংচুরের ঘটনার ১৪ বছর পর সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ তার অনুসারীর ১২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় আরো ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে নিহত বিএনপি নেতা জাকির হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে সিংড়া আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। নিহত জাকির হোসেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন।
সিংড়া আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন আলী মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেন। নাটোর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাদী মামলায় বলেন, ঘটনার দিন ২০১০ সালের ৫ মে সকালে রাজশাহীতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভায় যাওয়ার জন্য জাকির হোসেনসহ বগুড়া জেলার অন্যনেতাকর্মীরা প্রায় দেড় হাজার ছোট বড় গাড়ির বহর নিয়ে যাচ্ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাড়ি বহরটি নাটোরের সিংড়া বাস টার্মিনালের নিকট পৌঁছলে মামলার এক নম্বর অভিযুক্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশে তার ঘনিষ্ট সহচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেল, ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ, সাজ্জাদ হোসেন, তৎকালীন যুবলীগ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ভোলা, পলকের ব্যক্তিগত সহকারী রুহুল আমিন হুজুর, ডালিম আহমেদ ডনসহ অভিযুক্তরা পিস্তল, রাইফেল, রিভলবারসহ আগ্নোয়াস্ত্র ছাড়াও দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা করে।একপর্যায়ে আসামিরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁর স্বামী জাকির হোসেনসহ শতাধিক নেতাকর্মীকেবেধড়ক মারধর করে গুরুতরভাবে আহত করে। তাঁর স্বামী স্বামী জাকির হোসেনকে বেধড়ক মারধর করে মহাসড়কে ফেলে রাখেন। এ সময় বিএনপির গাড়িবহরের বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে ৭৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেন। বিএনপি নেতারা পালানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃরা ফাঁকা গুলি করে ত্রাসের সৃষ্টি করে।
পরে স্থানীয়রা এসে জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে প্রথমে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মারা যান তিনি ।
বাদী রাজিয়া সুলতানা বলেন, ঘটনার পর সিংড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে আসামিদের চাপে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। এখন আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি। তার স্বামী নিহত জাকির হোসেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন।