নাটোর অফিস।।
নাটোরের বড়াইগ্রামে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানোর ঘটনার ৫দিন পরে জালাল ভুঁইয়া (৪০) নামের এক শ্রমিকদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে থানার পুলিশ। সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত জালাল ভুঁইয়া শ্রমিকদল নেতা ও কালিকাপুর গ্রামের মোন্না ভুঁইয়ার ছেলে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী আহত উজ্জ্বল কুমার মন্ডলের শ্বশুর কৃষ্ণ চন্দ্র মন্ডল বাদী হয়ে জালাল ভুঁইয়াকে প্রধান আসামী করে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে বড়াইগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত রাতে উজ্জলের শ্বশুর বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সকালে অভিযান চালিয়ে জালাল ভুঁইয়াকে গ্রেপ্তারকরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যহত আছে বলে জানান তিনি।
ভুক্তভোগী আহত উজ্জ্বল কুমার বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া কালিকাপুর শ্মশানঘাট এলাকার বিশ্বনাথ মন্ডলের ছেলে। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের সঙ্গে থাকতেন।
গত ২০ নভেম্বর নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুরে উজ্জ্বল মন্ডল নামের ওই ব্যবসায়ীকে তার অন্তঃসত্তা স্ত্রীর পাশ থেকে তুলে নিয়ে ভরা বাজারে প্রকাশ্যে পিটিয়েছেন পৌর বিএনপির নেতাকর্মীরা। উজ্জ্বলের মারপিটের হাত থেকে বাঁচাতে তাঁর মা, প্রতিবেশী এমনকি অন্তঃসত্তা স্ত্রীর অনুনয়ও কানে তোলেননি বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের মারপিটে প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়লে ওই অবস্থায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করে তারা।পুলিশ আদালতে পাঠালে শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে জামিন দেন বিচারক। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার সঙ্গে চলাফেরা করায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁকে পেটান বলে অভিযোগ। উজ্জলকে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী উজ্জ্বল কুমার মন্ডল ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পরিবারকে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। এসময় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে পুলিশে দেওয়ার ঘটনাকে বেআইনি বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। পরে বড়াইগ্রাম থারার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে দেখা করেন এবং এঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা বিএনপির নেতা-কর্মী হলেও যারা ছেলেটাকে আঘাত করেছে তাদের ঢাকা পৌঁছানোর আগে যেন গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন তিনি।’