নাটোরঃ নাটোরের ৪টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২টি আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে শঙ্কা তৈরী হয়েছে। আসনগুলো হল নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া) ও নাটোর-২(সদর-নলডাঙ্গা)। আসন দুটির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে প্রশাসনও। যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ও সহিংসতা এড়াতে প্রস্তত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।
আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর থেকে এ দুই আসনের নির্বাচনী প্রচারপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বড় দুই দলের প্রচারণা ছিল অসম। আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা দলীয় কোন্দল মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচারণা চালাতে পারলেও আইনগত জটিলতায় প্রার্থী বিভ্রাট ও পরিবর্তনের কবলে পড়েছে বিএনপি প্রার্থীরা।
নাটোর-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল ও বিএনপি প্রার্থী অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরীন। শুরু থেকেই বিএনপি থেকে শিরীনের প্রার্থীতা নিশ্চিত থাকলেও মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষ সময়ের কয়েক ঘন্টা আগে তা পরিবর্তন হয়। দীর্ঘ আইনি জটিলতা শেষে ভোটগ্রহণের ৩ দিন আগে দলীয় প্রতীক ফিরে পান শিরীন। অপরদিকে শহিদুল ইসলাম বকুলও মনোনয়ন পাবার পর থেকে দ্বিধায় ছিলেন যার অবসান হয় তাকে চুড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে। এমন অবস্থায় বিএনপির দূর্গ হিসেবে পরিচিত লালপুর উপজেলায় এবার হানা দিতে চায় আওয়ামী লীগ। আর ভোটের দিন বিএনপিও তাদের ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে চায়। এ নিয়ে লালপুরের স্থানীয় ভোটাররা সংঘাতের আশঙ্কা করছেন। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাগাতিপাড়া উপজেলার বাসিন্দা হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে এবার সেখানকার ভোট অন্য প্রতীকে যাবে না নৌকা ছাড়া। বাগাতিপাড়ার ভোটাররা নিজ এলাকার প্রার্থীকে হতাশ করবেন না বলেও একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অপরদিকে, নাটোর-২ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল ও বিএনপি থেকে সাবিনা ইয়াসমিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শিমুলের নিজ এলাকা নাটোর সদর ও সাবিনার নলডাঙ্গা। দুই উপজেলায় সাংগঠনিক দিক দিকে আওয়ামী লীগ যতটা শক্তিশালী, বিএনপি ততটাই দূর্বল। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণার সপ্তাহখানেক পর থেকে প্রচারণা শুরু করলেও ধারাবাহিকভাবে বাধার অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর। শিমুলের তুলনায় সাবিনা গণসংযোগে একদম পিছিয়ে। সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, জিততে হলে সাবিনাকে নিজ এলাকার পাশাপাশি সদরের কেন্দ্রগুলেতে বিজয়ী হতে হবে, যা বিএনপির পক্ষে দুরুহ। কিন্ত সদরে শিমুল একচেটিয়া ভোট পেলে নলডাঙ্গার ভোট তার কমই প্রয়োজন পড়বে। এ দিক দিয়ে জেলার এ হেবিওয়েট আসনে এগিয়ে থাকছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী শিমুল।
নাটোর-৩(সিংড়া)আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির অসম ভোট আর নাটোর-৪(বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) বিএনপি প্রার্থীর ভোট স্থগিত হওয়ায় নির্বাচনী আবেদন কমলেও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নাটোর-১ ও ২ আসনে, এমনটাই ভাবছেন ভোটাররা।