বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তানদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ

নাটোর অফিস ॥
নাটোরে বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে স্ত্রী কন্যাদের উপরে অন্যায় নির্যাতনসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী মেহনাজ আকতার আমিন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় একটি রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই অভিযোগ তুলে বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপারের শাস্তির দাবী জানান তিনি। এ সময় তার দুই সন্তান ফাতিহা তাসনীম হক ও রাদিয়া ফিদান হকসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মেহনাজ আকতার আমিন অভিযোগ করেন, ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর নাটোর সদরের জংলী গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে বর্তমানে পুলিশের বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হকের সাথে তার পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। ২০২১ সালে র‌্যাবে পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় সেনাবাহিনী সর্ম্পকে অশালিন ও কুরুচিপূর্ন কথা বলার ফোন আলাপ ফাঁস হওয়ার জের ধরে ফজলুল হককে সরকার শাস্তি দেয়। একই বছর তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্তও করে। এ সময় তিনি একাধিক নারীর সাথে পরকিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। বাধা দিলে তিনি স্ত্রী সন্তানদের মারপিট শুরু করেন। ২০২৩ সালে ফজলুল হক পুনরায় ঠাকুরগায়ে ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করে সেখানকার জেলা হিসাব রক্ষন অফিসের এক নারী কর্মকর্তার সাথে আবারো পরকিয়া সর্ম্পক গড়ে তোলে। একটি ভাড়া বাসায় সেই নারীর সাথে অবস্থান করেন। খবর পেয়ে মেহনাজ আকতার আমিন তার নাবালক দুই সন্তানকে নিয়ে সেখানে গেলে তার স্বামী ফজলুল হক কনকনে শীতের রাতে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় চলতি বছরের ১৩ মার্চ বিগত সরকার ফজলুল হককে আবারো বরখাস্ত করে। ইতোমধ্যে ফজলুল হক জেলা হিসাব রক্ষন অফিসের কর্মরত সেই নারী কর্মকর্তার সাথে বিয়ে করে নাটোর শহরের মোহনপুরে বাসা নিয়ে বসবাস শুরু করেছেন। এ সব ঘটনার প্রতিবাদ করায় গত ছয় মাস থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের কোন খরচ বহন না করে উলটো স্ত্রী মেহনাজ আকতার আমিন এবং তার পিতা মাতা ও ভাইদের নামে দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। এ বিষয়ে ফজলুল হকের স্ত্রী ও সন্তানরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করে উপযুক্ত বিচার দাবী করেছেন।
এ বিষয়ে বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে বলেন, তিনি কখনোই কারো সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন না। তার প্রথম স্ত্রী মেহনাজ আকতার আমিন নিজেই পরকীয়ায় লিপ্ত। এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে প্রথম স্ত্রী নানাভাবে তাকে সমাজে অসম্মানিত করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *