নাটোর অফিস॥
নাটোরের লালপুরে এক কৃষকের ধানের চাতাল থেকে একটি সাপ মারার পর থেকে ছড়িয়ে পড়েছে রাসেল ভাইপার আতংক। চাতালের কর্মরত শ্রমিকরা ওই সাপটিকে মেরে ফেলেছে। সাপটি রাসেল ভাইপার বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যাম ফেসবুকসহ এলাকায় প্রচার হওয়ার পর থেকে পদ্মা নদী বিধৌত এই উপজেলার মানুষদের মাঝে রাসেল ভাইপার আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ধার হওয়া সাপটি মেরে ফেলার ভিডিও ধারন করে ‘সাংবাদিক ওমর ফারুক খান’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে রাসেল ভাইপার বলে প্রচার করা হয়। এর পর থেকে ওই এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ভুল তথ্যটি জনমুখে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকা জুড়ে সৃষ্টি করেছে আতঙ্ক । তবে মেরে ফেলা সাপটি ‘ঘর গিন্নি সাপ” বলে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির।
স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ পারভেজসহ একাধিক ব্যাক্তি জানান, ফেসবুকের মারফতে সাপের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পরে আমরা রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্কে আছি। এই বুঝি রাসেল ভাইপার বের হয়ে কামড় দেয়।’
ধানের চাতালের মালিক সত্যেন্দ্রনাথ বলেন, গত কাল চাতালের ছাই কাটছিলো শ্রমিকরা। এ সময় একটি সাপ বের হয়। পরে শ্রমিকরা সাপটি মেরে ফেলেন। তবে এটি রাসেল ভাইপার কিনা বলতে পারবো না।’
অনেকেই মনে করছেন,সত্যতা যাচাই না করেই ফেসবুকের মাধ্যমে আতংক ছড়ানো হচ্ছে।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মোঃ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, একটি সাপ মারা পড়েছে তিনি ফেসবুকে দেখেছেন তবে এটি রাসেল ভাইপার কিনা তিনি বলতে পারছেন না। লালপুর হাসপাতালে এখন পর্যন্ত রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ানো কোন রোগী আসে নি। ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে পদ্মার চরসহ উপজেলা জুড়ে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান, হাসপাতালে এন্টিভেনাম আছে। আতংকিত হওয়ার কোন কারন নেই।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আখতার বলেন, এ বিষয়টি তার জানা নেই।
এদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামান্ত লাল সেন সারা দেশে আতঙ্ক ছড়ানো রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছেন। দেশের সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুদ রাখার পাশাপাশি কোনো অবস্থাতেই যেন অ্যান্টিভেনমের স্টক খালি না থাকে, সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। শনিবার (২২ জুন) সকালে সারা দেশের সিভিল সার্জন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বিভাগীয় পরিচালক, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকসহ দেশের সমগ্র স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি এসব নির্দেশনা দেন।