নাটোর অফিস ॥
অবশেষে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ রোববার সকালে তিনি এই ঘোষণা দেন। এর আগে গতকাল ২০ এপ্রিল উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরী সভায় তাকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয় উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে “কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না” মর্মে ২২ এপ্রিলের মধ্যে জবাব চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক টেলিফোন করে রুবেলকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য গত ১৬ এপ্রিল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অপর প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ এবং মারধর করে সিংড়া উপজেলার পার সাঐলএ তার গ্রামের বাাড়িতে ফেলে রেখে আসা হয়। এই ঘটনায় দেলোয়ার হোসেন পাশারের ভাই মজিবর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করে প্রথমে সানোয়ার হোসেন সুমন এবং নাজমুল হোসেন বাবুকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে সানোযয়ার হোসেন সুমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে লুৎফুল হাবিব রুবেলের পক্ষে এই অপহরণ এবং মারধরের কথা স্বীকার করে। গত ১৯ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত দেলোয়ার হোসেন পাশাকে দেখতে গিয়ে ডাক তার তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপি তার শ্যালক উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবিব রুবেলকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।
লুৎফুল হাবিব রুবেল জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং দলের নেতৃবৃন্দের গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে দল যা সিদ্ধান্ত নিবে তাও তিনি মাথা পেতে নেবেন বলে ঘোষণা দেন। তবে ১৬ এপ্রিল দেলোয়ার হোসেন পাশাকে অপহরণ এবং মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের রাজণীতির সাথে জড়িত থাকার সময় গোল-ই-আফরোজ সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিেিলন। বর্তমানে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।তিনি তিনবার সেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর মধ্যে দুই বার প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দেয়া নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেন । পলক মন্ত্রীর শ্যালক হয়ায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এমন একটি নাটক সাজানো হয়েছে। বর্তমানে যে উদ্ভুত পরিস্থির সৃষ্টি হয়েছে তার সাথে তিনি কোন ভাবেই জড়িত নন। এটা একটি ষড়যন্ত্র। আমাকেসহ আমার পরিবারকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করে এই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। তিি প্রধানমন্ত্রী নির্দেশের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষনা দিচ্ছেন। আজ যে কোন সময় তিনি তার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সপক্ষে রির্টানিং অফিসারের কাছে লিখিতভাবে জানাবেন।
এদিকে রোববার দুপুর ১ টা ৫০ মিনিটের সময় চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেলের প্রার্থীতা প্রত্যারের লিখিত আবেদন পত্র জেলা রির্টানিং অফিসারের কাছে জমা দেয়া হয়। রুবেলের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলার রাখালগাছা গ্রামের আজহারুল ইসলাম ও লাইলী বেগমের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন প্রার্থীতা প্রত্যারের লিখিত আবেদন জেলা রির্টানিং অফিসারের কাছে জমা দেন। ওই লিখিত আবেদনে লুৎফুল হাবিব রুবেল উল্লেখ করেছেন ,তিনি সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারনে নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
জেলা নির্বাচন ও রির্টানিং অফিসার আব্দুল লতিফ শেখ রুবেলের প্রার্থীতার নিখিত প্রত্যাহার পত্র হাতে পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান , রোববার দুপুর ১ টা ৫০ মিনিটের সময় তার প্রতিনিধি মিনহাজ উদ্দিনের মাধ্যমে দাখিল করা হয়েছে।