নাটোর অফিস॥
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকুরি দেওয়ার নামে ভূয়া নিয়োগপত্র তৈরী করে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে নাটোরের লালপুরে মিরন ইসলাম @ মোস্তাক (৩৪) নামের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫। মিরন ইসলাম @ মোস্তাক মহরকয়া ভাঙ্গাপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদ মালিথা ছেলে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে নাটোর র্যাব ক্যাম্পে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান নাটোর র্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক (সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার) মো. রায়হান শফিক । মোস্তাকের প্রতারণার শিকার হয়ে মোহরকয়া ভাঙ্গাপাড়া এলাকার ভূক্তভোগী মোঃ শফিকুল ইসলাম @বুদু মন্ডল (৪৫) লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে লালপুর উপজেলার মহরকয়া ভাঙ্গাপাড়া এলাকা অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি ভূয়া নিয়োগপত্র, একটি ষ্ট্যাম্প পেপার উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
প্রতারণার শিকার ভূক্তভোগী মোঃ শফিকুল ইসলাম @বুদু মন্ডল বলেন, তার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে মোস্তাক তাঁর কাছ থেকে দশ লাখ টাকা দাবি করে। সরল বিশ্বাসে গত ৬ জুলাই ২০২৩ সালে তার নিজ বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় একশ টাকার নন জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে ৪ বারে নগদ ৫ লাখ ২০ টাকা নিয়েছিলেন। পরে অবশিষ্ট ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আমার ছেলের নামীয় উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড, লালপুর ব্যাঞ্চের চেক বইয়ের তিনটি ফাকা চেক প্রদান করলে প্রতারক মোস্তাক তার ছেলের নামে একটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে ভর্তির নিয়োগপত্র প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, পরে ৩১শে জুলাই নিয়োগ পত্রটি নিয়ে তার ছেলেসহ কর্মস্থলে চট্রগ্রামের বায়োজিত ক্যান্টনমেন্টের সামনে গেলে প্রতারক মোস্তাক তাকে ফোন দিয়ে নিয়োগপত্রটি কাউকে দেখাতে নিষেধ করে এবং আরো বলে আমার লোক আপনার কাছে যাবে। এভাবে ভূক্তভোগী সেখানে তিন দিন অবস্থান করে আরো প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করে। তিন দিন পর প্রতারক মোস্তাক তাকে ফোন দিয়ে বলে আপনি বাড়ীতে আসেন আপনার টাকা ফেরত দিব। এ বিষয়ে মনে সন্দেহ হলে তিনি নিয়োগপত্রটি সেখানে একজন সেনাবাহিনীর সদস্যকে দেখালে সেনাবাহিনীর সদস্য জানায় যে, নিয়োগপত্রটি সঠিক নয় বা ভূয়। তখন তিনি বুঝতে পারেন, তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। বাধ্য হয়ে তাঁরা র্যাবের কাছে অভিযোগ করেন।’
নাটোর র্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক (সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার) মো. রায়হান শফিক বলেন, মিরন ইসলাম @ মোস্তাক সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিতেন। এরপর তিনি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরি প্রার্থীদের দিতেন। এরপর চাকরি প্রার্থীরা কর্মস্থলে গিয়ে জালিয়াতির বিষয়টি যখন জানতে পারতেন, তখন তাঁদেরকে নানা ভয়ভীতি দেখাতেন।
রায়হান শফিক আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মোস্তাকে লালপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তাক কম্পিউটারে ইডিটিং করে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে সেনাবাহিনীর মনোগ্রামসহ সিল মোহর ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে ভূয়া নিয়োগপত্র চাকুরী প্রত্যাশীগণের নিকট প্রদান করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
এ ঘটনায় অভিযোগকারী বাদী হয়ে লালপুর থানায় গ্রেপ্তারকৃত মিরন ইসলাম @ মোস্তাকের বিরুদ্ধে প্রতারনা মামলা দায়ের করেছেন।