নাটোর অফিস ॥
নাটোরের লালপুরে এক রাতে ১০ টি রাইস মিল ও কাঠ মিলের বৈদ্যুতিক মিটার খুলে নিয়ে গেছে একটি চক্র। যাওয়ার সময় সেখানে একটি মুঠোফোন নম্বর কাগজে লিখে সাঁটিয়ে দিয়ে গেছে। সেই নম্বরে কল করা হলে ভুক্তভোগীদের কাছে বলা হচ্ছে মিটার ফেরত পেতে চাইলে বিকাশের মাধ্যমে আট হাজার পাঠিয়ে দিন, আপনার মিটার আপনার কাছে পৌঁছে দেবো।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে উপজেলার শ্বালেশ্বর, কলসনগর, সাতপুকুরিয়া, চাঁদপুর, ভবানীপুর, কালুপাড়া ও বিভাগ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনার পর থেকে রাইস মিল ও কাঠ মিলের মালিকরা মিটার চুরি আতঙ্কে রয়েছেন ।
এ ঘটনায় কাগজে লিখে রাখা মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ ও দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে লালপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করবে বলে জানিয়েছে লালপুর পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের এজিএম অলিউল ইসলাম ।
এজিএম অলিউল ইসলাম আরো বলেন, এর আগে মিটার চুরির প্রবনতা ছিলো সিংড়া ও গুরুদাসপরে। লালপুরে প্রথম এ ঘটনা ঘটেছে। যে দশটি মিটার চুরি হয়েছে তার মধ্যে ৮টি সদর দপ্তরের আর দুটি আমাদের অফিসের। প্রতিটি মিটারের দাম ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।’
ভুক্তভোগীরা হলেন- উপজেলার কলসনগর গ্রামের আমিরুল ইসলাম, বাচ্চু বিশ্বাস, সাতপুকুরিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ, সেকান্দার আলী, চাঁদপুর গ্রামের আব্দুর রহমান, মিজানুর রহমান, মুক্তার আলী, ভবানীপুর গ্রামের খোয়াজ হাজী, শালেশ্বর গ্রামের আমির আলী।
কলসনগর গ্রামের ভুক্তভোগী রাইস মিল মালিক আমিরুল জানান, তার রাইচ মিল থেকে রিডিং মিটার রাতের অন্ধকারে চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বত্তরা। চুরি হওয়া মিটারের স্থানে ফাঁকা জায়গায় একটি চিটকুটে মোবাইল নাম্বার লিখে রেখে যায়। সেখানে লেখা ছিল ‘এই মিটার নিতে হলে ০১৯৪০-৯৭৪৮৯৭ এই নম্বরে ফোন দিয়ে যোগাযোগ করেন। ’ওই নাম্বারে ফোন দিলে চক্রটি জানায় আপনার মিটার নিতে চাইলে আট হাজার টাকা বিকাশ করেন। আমরা আপনার কাছে মিটার পৌঁছে দিবো।’
তিনি আরো জানান, এখনো কেউ চক্রটিকে টাকা দেয় নি। বিষয়টি মৌখিক ভাবে লালপুর পল্লীবিদ্যুৎ অফিস ও লালপুর থানা পুলিশকে জানিয়েছেন তারা। ’
আমিরুল ইসলামের মতো একই রাতে কলসনগর গ্রামের ভুক্তভোগী বাচ্চু বিশ্বাসের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি গেছে। তিনি জানান, চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে চিরকুটের ওই নম্বরে ফোন দিয়েছিলেন। অপর প্রান্ত থেকে মিটার ফেরত দিতে আট হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। এমনিতেই অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর টাকা খরচ করে মিলে একটি বৈদ্যুতিক মিটারের সংযোগ পেতে হয়েছে। মিটার চুরির পর আবারও নতুন মিটারের সংযোগ নিতে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা গুনতে হবে বলে জানান তিনি।’
লালপুর থানার ওসি মো. নাছিম আহমেদ জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেন নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।’