নাটোর অফিস॥
আর কিছু দিনের মধ্যেই কৃষকের গোলায় উঠতো গম। অথচ ফাল্গুনের এক পাশলা বৃষ্টিতে মাঠের পর মাঠ কাঁচা, আধা পাকা গম মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে নাটোরের লালপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়। অসময়ের এই বৃষ্টিতে মাথায় হাত পড়েছে এ অঞ্চলের গমচাষীদের। বাতাসে গম মাটিতে পড়ে যাওয়ায় গমের ফলনহানি হবে বলে জানিয়েছেন গম চাষীরা।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে লালপুরের আকাশে ধূসর মেঘে ছেয়ে যায়। শুরু হয়ে ঝিরঝিরে বৃষ্টি সঙ্গে দমকা হাওয়া। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়াতে মাঠের কাঁচা ও আধা পাকা গম মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
ওয়ালিয়া গ্রামের গম চাষী সোহেল রানা জানান, তিনি পৌঁনে দুই বিঘা জমিতে গমের চাষ করেছিলেন। সঠিক পরিচর্যায় গম গুলিতে শীষ এসেছিলো। আর কিছু দিন পরেই গম কাটা শুরু হবে। এবার তার গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু সকালের এক বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়ায় সব গম মাটিতে শুয়ে পড়েছে। মাটিতে পড়ে যাওয়া গমের দানা চিকন কবে। ফলে আশানুরুপ ফলন হবে না বলে জানান তিনি। তার গম চাষে এবার প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।’
গম চাষী কালাম জানান, তিনি ৭ কাঠা জমিতে গমের চাষ করেছিলেন। গমও ভালো হয়েছিলো। সকালের বৃষ্টিতে গম মাটিতে পড়ে যাওয়ায় গমের আশানুরুপ ফলন হবে না। এতে তার লোকসান গুনতে হবে বলে জানান তিনি।
চকনাজিরপুর গ্রামের গাম চাষী খায়রুল জানান, লাভের আশায় গমের চাষ করেছিলেন। গমও ভালো হয়েছিলো। সকালের বৃষ্টি ও বাতাসে সব গমের গাছ মাটিতে পড়ে যাওয়ায় সব গমের ফলন অর্ধেক হবে। এতে তার ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি।
লালপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে এবছর উপজেলায় ৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। এসকল জমি থেকে ২ হাজার ১৮৭ মেট্রিকটন গম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে।’
তবে ফাল্গুনের এই বৃষ্টিতে গম মাটিতে পড়ে যাওয়ায় নির্ধারিত লক্ষমাত্রা অর্জন হবে না বলে জানান কৃষকরা।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার প্রীতম কুমার হোড় বলেন, বাতাসে যে গম গুলি পড়ে গেছে সে গুলির দানা চিকন। ফলনও সামান্য কম হবে। তবে উৎপাদনে ততটা খারাপ প্রভাব পড়বে না বলে জানান এই কর্মকর্তা।’