নাটোর অফিস ॥
নাটোরের নলডাঙ্গার একটি এতিমখানায় চাঁদাবাজি করার সময় হেলাল সরকার জয়(২৮), লিমন হোসেন(২৭), ইউনুস আলী(২৭) ও শিহাব মিয়া (২৫) নামে ৪ ভুয়া সাংবাদিককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার তারা নলডাঙ্গা উপজেলার হালতিবিল অধ্যুষিত খাজুরা গৌরীপুর নূরানী এতিমখানা ও মাদ্রাসায় চাঁবাজি করতে এসে আটক হয়। আটক হেলাল সরকার জয় গাজিপুরের সাঈদ সরকারের ছেলে, লিমন হোসেন ময়মনসিংহের মোঃ ইমান আলীর ছেলে, ইউনুস আলী বগুড়ার মৃত আমিরুল ইসলামের ছেলে এবং শেরপুরের মৃত শাহিন মিয়ার ছেলে শিহাব মিয়া। তারা নিজেদের স্ব স্ব এলাকায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বলে দাবি করে। পরে আটককৃতদের বিরুদ্ধে গৌরীপুর নূরানী এতিমখানা ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃ রোকনুজ্জামান বাদি হয়ে নলডাঙ্গা থানায় একটি মামলা করেন।
এতিমখানা কর্তৃপক্ষ সহ এলাকাবাসী সুত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার সকালের দিকে একটি লাল রংয়ের এক্স ফিল্ডার প্রাইভেটকারে করে এতিমখানায় আসে ওই চারজন। গলায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের আইডি কার্ড ঝুলিয়ে এবং একটি ক্যানন ডিএসআরএল ক্যামেরা,একটি টাইপট ও একটি একটি বুম হাতে তারা এতিমখানায় প্রবেশ করে নিজেদের সাংবাদিক বলে পরিচয় দেয়। এসময় তারা প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়মের কথা বলে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটায় এলাকাবাসীদের সন্দেহ হলে তারা ওই ৪ জনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় ওই প্রাইভেট কারও জব্দ করে পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম জানান ,গৌরীপুর নূরানী এতিমখানা ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির কাছে তারা চাঁদা দাবি করলে গ্রামবাসি তাদেরকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
গৌরীপুর নূরানী এতিমখানা ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃ রোকনুজ্জামান বলেন, এর আগেও তারা সাবেক সুপারের কাছে এসে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করে টাকা নিতো। ইতিপুর্বে তারা বিভিন্ন সময়ে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে বলে জেনেছি। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর আমার কাছেও তারা টাকা দাবি করলে তাদেরকে প্রতিষ্ঠানের সভাপতির কাছে যেতে বলি। মঙ্গলবার তারা প্রতিষ্ঠানে এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে আবারও টাকা দাবি করে। এসময় এলাকার মানুষ তাদেরকে ভুয়া সাংবাদিক সনাক্ত করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান বলেন, একটি লাল প্রাইভেট কার নিয়ে ওই ৪জন খাজুরা ইউনিয়নের নুরানী এতিমখানা-মাদ্রাসায় যায়। সেখানে তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করে। এসময় এলাকাবাসী তাদের আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে আনে। পরে প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এসময় আটককৃতদের বহনকৃত প্রাইভেট কার সহ তাদের কাছে থাকা যাবতীয় মালামাল জব্দ করা হয়। আজ বুধবার তাদের আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।