নাটোর অফিস ॥
নাটোরে আবারো সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে মাওলানা সাইদুল ইসলাম নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষককে পিটিয়ে জখম করে সড়কের ওপর ফেলে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এবার ঘটনাটি ঘটেছে নাটোর সদর উপজেলার মাঝদিঘা গ্রামে। ১৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আহত মাওলানা সাইদুল ইসলাম উপজেলার মাঝদিঘা পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমান জিনাতের ছেলে এবং মাঝদিঘা নুরানী হফেজি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তিনি ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন রাজনীতির সাথে জড়িত বলে স্থানীয় একটি সুত্র দাবী করেছে।
মাওলানা সাইদুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মাগরিব নামাজ আদায় শেষে তিনি মাঝদিঘা নুরানী হফেজি মাদ্রাসায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করছিলেন। এ সময় মুখোশধারী ৫ থকেে ৭ জন লোক মাদ্রাসায় ঢুকে তাকে কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে সাদা মাইক্রোবাসে তোলে। এরপর মাইক্রেবাসের মধ্যে তাকে পিটিয়ে বাম হাত ভেঙে দেয়। পরে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে চিকুর মোড় এলাকায় তাকে ফেলে দিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। এসময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পরে তিনি সাইদুল ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পান। তার হাত-পায়ে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। দুর্বৃত্তরা তাকে পিটিয়ে মাদ্রাসা এলাকা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে চিকুর মোড় এলাকায় ফেলে যায়। এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কি কারনে তার ওপর এই হামলা এবিষয়ে তিনি কিছুই জানেননা।
নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করলে পুলিশ মামলা নেবে এবং ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য. গত এক মাসে নাটোরের লালপুর,নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াতের চার নেতাকে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা একইভাবে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে ফেলে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া হেলমেট ও মুখোশ পরিহিত বাইকারদের হামলার শিকার হয় আরো অন্তত ৫ জন। তাদের রাস্তার ওপর পথরোধ করে কুপিয়ে রগ কেটে, হাতুরি পেটা ও গুলি করে হাত-পা ভেঙ্গে সড়কের ওপর ফেলে যায়। হামলায় আহত ১০ জনের মধ্যে ছয় জন নলডাঙ্গা উপজেলায়। অবশিষ্টজনরা সিংড়া, লালপুর ও সদর উপজেলায়। এদের কয়েকজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।