নাটোর অফিস ॥
নাটোরের গুরুদাসপুরে যৌতুকের দাবীতে স্ত্রী রিনা খাতুনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী রনি মোল্লাকে মৃত্যুদন্ড সহ ৩০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েে আদালত। আজ বুধবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই আদেশ দিয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত রনি মোল্লা গুরুদাসপুর উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামের হাবিল মোল্লার ছেলে।
আদালত ও মামলার এজাহার সুত্রে জানানযায়,২০১২ সালে গুরুদাসপুর উপজেলার পুরুলিয়া গ্রামের হাবিল মোল্লার ছেলে রনি মোল্লার সাথে বিয়ে হয় নাটোর সদর উপজেলার শিবদুর গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে রিনা খাতুনের। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবীতে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন শুরু করে স্বামী সহ শ্বশুড়বাড়ীর লোকজন। বিষয়টি রিনা খাতুন তার বাবাকে জানালে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে রনিকে এক লাখ টাকা দেন। এরপর আবারো টাকা দাবী করে নির্যাতন করতে থাকে। এরপর আরো তিনদফায় টাকা ও সোনার গহনা দেন রিনার বাবা। এরপরও ২ লাখ টাকা দাবী করে। কিন্তু তার দাবী পুরনে অস্বীকৃতি জানালে রনি মোল্লা আবারও তার স্ত্রী রিনা খাতুনকে মারপিট করতে থাকে। ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর নির্যাতনের এক পর্যায়ে রিনাকে ধারালো চাকু দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে এবং পিটিয়ে জখম করে। ঘটনাটি প্রতিবেশীরা দেখে রিনার বাবার বাড়ীতে খবর দেয়। খবর পেয়ে রিনার বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত রিনার বাবা মফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে রিনার স্বামী রনি মোল্লা সহ ৫ জনের নামে গুরুদাসপুর থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ রনি মোল্লাকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরন করে। পরে পুলিশ তদন্ত করে মামলায় অন্যদের অব্যাহতি দিয়ে রনি মোল্লাকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। দীর্ঘ ৫ বছর মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে আদালতের বিচারক রনি মোল্লাকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। বিচারক একই সাথে ৩০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
আদালতের স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান জানান,জরিমানার টাকা নিহতের পিতা ও মা পাবেন বলে বিজ্ঞ বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন।