নাটোরঃ নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে দল ও ভোটারদের শেষ মুহূর্তে চাওয়া এখন একটাই- সাংসদ আবুল কালাম। নিজেরাই তফশিল ঘোষণার পর সাংসদের জন্য নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন। তারা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট উন্নয়নের স্বার্থে আবারো সাংসদ কালামকে মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, কালাম ভোটে নির্বাচিত না হয়েও সরকারের চলতি মেয়াদে যে উন্নয়ন করেছেন দুই উপজেলায়, তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য হলেও সাংসদ কালামকে চেয়েছেন তারা।
গত সাড়ে চার বছরে নাটোর-১ আসনে সাংসদ কালামের নেতৃত্বে অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-কাদিরাবাদ সেনানিবাসে বাউয়েট ভবন নির্মাণ, নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে শিল্প পার্ক স্থাপনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ৩২৪ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ, ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক মাঝগ্রাম রেলওয়ে জংশন নির্মাণ, ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫১ টি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় ও স্নাতক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪তলা ভবন নির্মাণ, ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭২টি কালভার্ট নির্মাণ, ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২১৭টি গ্রামে ৩৭ হাজার গ্রাহককে শতভাগ বিদ্যুত সংযোগ প্রদান, লালপুর পদ্মার চরে ইপিজেট নির্মাণ, ৮ লক্ষ্য টাক ব্যয়ে ১৫০ জন গ্রাম পুলিশকে ১টি করে সাইকেল প্রদান, ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে ১টি করে গরীবের এম্বুলেন্স প্রদান, ১ কোটি টাকা ব্যয়ে লালপুর থানা ভবন নির্মাণ, ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়ালিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ৩ তলা ভবন ও প্রাচীর নির্মাণ, ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩০০টি নলকূপ ও তারা পাম্প স্থাপন, শহীদ মমতাজ উদ্দীন ফাউন্ডোশনের আওতায় ৯৫০ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বৃত্তি প্রদান, বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে ২০ হাজার ব্যাগ উন্নত জাতের ধান বীজ প্রদান, ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২৮টি রাস্তা পাকাকরণ, সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯টি ইউপি ভবন নির্মাণ, ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই উপজেলায় ২ টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ১৪ জন ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধার মাঝে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৪টি বাড়ি নির্মাণ, ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে মসজিদ কমপ্লেক্স ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণাধীন, ৬০০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্যের বিনিময়ে ৬৪টি কাঁচা রাস্তা, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ সংস্কার, ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৫৫টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন, ১০ হাজার বয়স্ক, সাড়ে ৪ হাজার বিধবা, দেড় হাজার প্রতিবন্ধী, ২৭৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২৫০ জন হিজড়া ও ভিক্ষুক পুনর্বাসন ভাতা প্রদান চলমান, ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ হাজার বাড়িতে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুতায়ন, ৩০০ জন দন্ত রোগীকে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে ১৫ লক্ষ টাকা প্রদান, ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কৃষকদের মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ, ৩৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩৩৮৮ জন কৃষককে সার-বীজ প্রদান, ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন, ঘূর্ণিদূর্গত মানুষের জন্য ৫০০ বান্ডিল ঢেউটিন বিতরণ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় ৬৪টি মসজিদে প্রাথমিক শিক্ষা, ৫৩ টি মসজিদে কোরআন শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা।
জঙ্গিবাদ, ইউটিজিং, সন্ত্রাস, বাল্যবিবাহ বন্ধে ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে সচেতনতার সৃষ্টিতে ব্যাপক আয়োজন, টিআর প্রকল্পের আওতায় ৫০০ মসজিদ ও মন্দিরে ১ কোটি নগদ অর্ত প্রদান, ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬টি মসজিদে এসি স্থাপন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ৫০০ মৎসজীবিকে খাদ্য সহায়তা, লালপুর পাইলট বালিকা স্কুল এন্ড কলেজে ৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে অডিটোরিয়াম নির্মাণ, আখের আদলে লালপুরের প্রবেশদ্বারে ১০ লক্ষ্য টাকা ব্যয়ে চারটি তোরণ নির্মাণ, ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন রোধে ব্লক নির্মাণ ও স্থাপনা, ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে বড়াল নদীতে বিদ্যুৎনগর (নির্মানাধীন), শালাইনগর ও পাকা ব্রিজ প্রকল্প অনুমোদন, ১টি ডিগ্রি কলেজ ও ২ টি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয়করণ, ১কোটি ১০ লক্ষ্য টাকা ব্যয়ে ২৩টি ঈদগাহের প্রাচীর নির্মাণ, ২০টিরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, ১৬ লক্ষ্য টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পোষাক তৈরী, মোহরকয়া প্রতিবন্ধি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ১১ কোটি টাকা চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।
এমপি কালামের নির্দেশে গত কয়েকমাস নৌকার পক্ষে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কাজ করা দলীয় কর্মীরা বিশ্বাস করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের হতাশ করবেন না। কেননা দলীয় প্রতিটি নির্দেশনা মেনে দুই উপজেলার ঘরে ঘরে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বার্তা পৌছে দিয়েছেন। এ লক্ষে গত ৬ মাসে দুই উপজেলায় সহস্রাধিক উঠান বৈঠক করে রেকর্ড সৃষ্টি করেন, যা বাংলাদেশের কোন আসনে হয়নি।
অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে নাটোর-১ আসনে সংগঠিত ও শক্তিশালী আওয়ামী লীগ। কারণ হিসেবে স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন সাংসদের সাথে নেতাকর্মীদের অব্যাহত যোগাযোগ। উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন গণজমায়েতে সাংসদের জনসম্পৃক্ততা দূরে সরে থাকা কর্মীদের কাছে টেনেছে নিঃসন্দেহে। যার ফল পাওয়া গেছে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে।
তবে এ পথ পরিক্রমায় সাংসদ কালাম স্বস্তি পেয়েছেন খুব কমই। বিরোধীদল বিএনপি নয়, তার সমালোচনায় সবচেয়ে বেশী মুখর ছিলেন আওয়ামী লীগেরই অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। একদিকে সাংসদ কালাম অন্যদিকে দুই উপজেলায় নিজ দলেরই ৫/৬ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী দলীয় ফোরামে না করে প্রত্যক্ষভাবেই তার সমালোচনা করে আসছিলেন। কঠিন এ সময়ে কালামের পাশে ছিলেন দলের নিবেদিত নেতাকর্মীরা।
তাই শেষ মুহূর্তে এ আসনের দলীয় কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের প্রত্যাশা, তাদের উন্নয়নের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো নৌকা তুলে দেবেন বর্তমান সাংসদ আবুল কালাম আজাদের হাতে।