প্রতিনিধি, বাগাতিপাড়া॥
সুদৃশ্য ভবন। তার দেয়ালের এক কোণে আশ্রয় নিয়েছে একটি ছাগল। আর ভবনের বারান্দাতেও আশ্রয় নেয়ার অপেক্ষায় আছে আরেকটি ছাগল। না, এটি কোন পরিত্যক্ত ভবন নয়। এটি একটি স্বাস্থকেন্দ্র যেখানে থাকার কথা স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা মানুষের ভীড়। উল্টো মানুষের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে আছে গবাদিপশু!
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটির ভবন নির্মাণের ১০ বছর পার হলেও জনবল মঞ্জুরী হয়নি। ফলে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির সব পদ শূন্য থাকায় ওই কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় কয়েক হাজার পরিবার । স্থানীয় লোকজন তাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, ‘ পদ খালি তাই স্বাস্থ্যকেন্দ্র পশুর চারণভূমি!
সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে স্বাস্থ্য প্রকোশলী অধিদপ্তর (এইচইডি) বাস্তবায়ন করে। দি¦তল ভবনের ওই কেন্দ্রটিতে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার, ফার্মাসিস্ট, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা,আয়া ও নিরাপত্তা প্রহরী পদ মঞ্জুরী হওয়ার কথা। কিন্তু স্থাপনের প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এর ৫টি শূন্যপদের একটিও মঞ্জুরী হয়নি। ফলে বিশেষ করে মা ও শিশু সহ প্রায় কয়েকহাজার পরিবার ওই কেন্দ্রটি থেকে চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রটিতে সপ্তাহে দুদিন মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার উপজেলার লোকমানপুর এবং দয়ারামপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালানো হলেও রয়েছে নানা অনিয়ম। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকগণ এক থেকে দুই ঘণ্টার বেশি সময় থাকেননা। আবার কোন কোন সপ্তাহে একেবারেই আসেন না ।
কেন্দ্রটির জমিদাতা হাজী আঃ ওয়াহেদ বলেন, গ্রামের দরিদ্র অসহায় মানুষের স্বাস্থ্য সেবা পাবে এমন আশায় তিনি ৩০ শতাংশ জমি দান করেছিলেন। কিন্তু দশ বছর পার হলেও গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হয়নি। তার জীবদ্দশায় তিনি ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু হওয়া দেখতে পাবেন কিনা তানিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় মোশারফ হোসেন জানান, কেন্দ্রটিতে লোকবল না থাকায় এলাকার সাধারন মানুষ বিশেষ করে মা ও শিশুদের চিকিৎসা নিতে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হয়। তবে তিনি স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দ্রুত চালুর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার মোঃ খাদেমুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির ৫টি পদ মঞ্জুর না হওয়ায় ওই ইউনিয়নের জনসাধারণের চিকিৎসা সেবা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য লোকমানপুর ও দয়ারামপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে সপ্তাহের দুদিন চিকিৎসা প্রদানের জন্য চিকিৎসক যাচ্ছে। অস্থায়ী একজন ফার্মাসিষ্ট ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রহরীর ব্যাবস্থা রয়েছে। এছাড়াও ওই পদগুলো মঞ্জুরীর জন্য স্থানীয় এম.পি মহোদয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদী দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।