নাটোর অফিস॥
স্বামী-শ^শুরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা করে হুমকির মুখে পড়ার অভিযোগ করেছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার এক গৃহবধু সম্পা খাতুন ও তার পরিবার। একই সাথে প্রতিকার না পাওয়ারও অভিযোগ করা হয়। মঙ্গলবার বাগাতিপাড়ায় একটি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধু ও তার পরিবার এই অভিযোগ করেন। সম্পা খাতুন বাগাতিপাড়া উপজেলার হিজলী দিঘাপাড়ার নুরজ্জামান শেখের মেয়ে। তবে পুলিশ নিরবিচ্ছিন্নভাবে তদন্তকাজ চালিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে। অন্যদিকে অভিযুক্তরা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সম্পা খাতুন লিখিত বক্তব্যে বলেন, চার বছর পূর্বে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বৃ-কাশো গ্রামের মোজাহার মোল্লার ছেলে সজল মোল্লার সাথে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে স্বামী সজল মোল্লা দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। সেই যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা স্বীকার করলে গৃহবধুকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে এবং তার বাবার উপহার দেওয়া দেড় ভরি ওজনের সোনার গহনা তার শ^শুর কেড়ে নেয়। পরে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোনে তিনি বাবার বাড়ির লোকজনকে জানালে সম্পার মা-ভাই-মামীসহ কয়েকজন তার শ^শুর বাড়িতে যান। সেখানে যৌতুকের টাকা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে স্বামী-শ^শুরসহ শ^শুর বাড়ির লোকজন লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মা-মামীসহ সবাইকে আহত করে। তাদের মারপিটে গৃহবধুর মা শাহারা বেগমের হাত ভেঙ্গে যায় এবং মামী আলেয়া বেগম চোখের পাশে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এসময় তাদের পিটিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখা হলে ট্রিপল নাইনে( ৯৯৯) ফোন করে পুলিশের সহায়তায় তারা মুক্তি পান। এঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুনাল আদালতে ওই গৃহবধু স্বামী-শ^শুরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি বলেন, আদালত পুলিশের পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন।
এদিকে গৃহবধুর মামা নাসির উদ্দিন ওই সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, মামলা করার পর থেকে তা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করছে সম্পার শ^শুর বাড়ির লোকজন। এছাড়া মামলা করেও প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা পাল্টা অপর একটি মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত ওই গৃহবধুর শ^শুর মোজাহার মোল্লা বলেন, মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট। তবে তারা একটি মামলা করায় আমরাও একটি মামলা করেছি।
এ বিষয়ে পুলিশে পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান জানান,হুমকি দেয়ার বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।