নাটোর অফিস॥
নাটোরের লালপুরে ওসমান গনি প্রামানিক (৪৫) নামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকে প্রকাশ্যে হাত ও পায়ের রগ কেটে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ও জেলা জামায়াতের আমিরসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- এজাহারনামীয় ০১ নং আসামী কদিমচিলান পুকুরপাড়া সিলান গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে ও জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো. মহসিন আলম (২৮), ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত নসিম উদ্দিনের ছেলে ও জেলা জামায়াতের আমির মো. আব্দুল লতিফ প্রামানিক (৫৫), মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে মো. মোখলেসুর রহমান, নওশাদ আলীর ছেলে মোঃ নাদিম (৩৪), আফসার উদ্দিনের ছেলে মো. জাকিরুল ইসলাম। সোমবার দুপুরে জেলা পুলিশের এক প্রেস রিলিজে এ তথ্য জানানো হয়।
রোববার রাতে নিহতের ভাতিজা কুতুব উদ্দিন বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫ জনের বিরুদ্ধে লালপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত ওসমান গনি কদিমচিলান ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া চিলান গ্রামের আখের উদ্দিনের ছেলে। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল সমর্থক হিসেবে কদিমচিলান ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একাংশের সাধারন সম্পাদক ও একই গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন।
লালপুর থানার ওসি মো. উজ্জল হোসেন গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের ভাতিজা কুতুব উদ্দিন থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাতেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।’
ওসি আরো জানান, রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ওসমান গনি তার বাড়ি থেকে বের হয়ে ডাঙ্গাপাড়া চিলান বাজারে গাড়ির তেল কিনতে দাড়ান। এসময় প্রতিপক্ষের ১০-১৫ জন তাকে ঘিরে ধরে প্রথমে হাতুরিপেটা করে। এক পর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ওসমান গণির হাত-পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। গত জানুয়ারি মাসে একই গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ওসমান গনি। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে এটা পাল্টা খুনের ঘটনা। তদন্ত করে হত্যার আসল রহস্য উদঘাটন করা হবে।’
গত ৪ বছর ধরে ওসমান গনির সঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউলের বিরোধ চলছিল। এ বিরোধে ওসমান গনির বাড়িতে এসে তার বাবা ও ভাইসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে কুপিয়ে আহত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে এ ঘটনার জেরে গত জানুয়ারি মাসে কদিমচিলান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ওসমান গনি। কিছুদিন আগে জেল থেকে জামিনে আসেন তিনি। পূর্ব বিরোধের জেরে ওসমান গনিকে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। যারা হামলা করেছে তারা স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারী বলে লোক মুখে শুনেছেন।