নাটোর অফিস॥
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষ একই মাঠে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। এনিয়ে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারবারিষা ইউনিয়নে গতকাল সোমবার দিনব্যাপি উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানাগেছেÑ জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য উপজেলার ধারাবারিষা উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ব্যবহারের করতে আবেদন করে দুইপক্ষ। নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস গ্রুপের পক্ষে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম এবং জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যাক্ষ আহম্মদ আলীর পক্ষে আবেদন করেন ছাত্রলীগ নেতা তারেক মোল্লা। আনুষ্ঠানিকভাবে এক পক্ষকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া না হলেও ওই মাঠেই সমাবেশ করার জন্য উভয়পক্ষ মাইকিং করতে থাকে। সর্বশেষ গতকাল সোমবার সকালে মঞ্চ তৈরি করতে আসেন আহম্মেদ আলীর লোকজন। একই সাথে একই মাঠে মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি নেন গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের লোকজন। এতে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শের এ আলম বলেন, জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠনে খেলার মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষই আবেদন করে। আবেদনের প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য সমর্থিতদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় ওই মাঠে গিয়ে দেখা গেছেÑ সংসাদ সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের লোকজন ধারাবারিষা উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণপূর্বে মঞ্চ প্রস্তুত করছে। একই সাথে ওই মাঠের পশ্চিমাংশে আওয়ামী লীগ নেতা আহম্মদ আলী সমর্থিত নেতা-কর্মীদেরও মঞ্চ প্রস্তুত করতে দেখা গেছে। তবে মাঠের আশপাশে পুলিশ প্রহরা থাকলেও সন্ধ্যায় ধারাবারিষা বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে আহম্মদ আলীর সমর্থকরা।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যাক্ষ আহম্মদ আলী মোল্লা সোমবার সন্ধ্যায় জানান, তার লোকজন প্রথমে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দেয়নি। ওই মাঠে সমাবেশ করার পক্ষে অনড় নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলও করছে। একারণে তিনি ওই মাঠেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সোমবার সন্ধ্যায় জানান, জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান একই সাথে আয়োজন করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা আহম্মদ আলীকে প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি তা মানেননি। উপরন্ত নেতা-কর্মীদের সাথে উদ্ভট আচরণ করেছেন। ওই মাঠেই অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ তৈরি করছেন তারাও।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহা. মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে উভয়পক্ষকে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান পৃথক জায়গায় করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, আওয়ামী লীগের দুইপক্ষকে নিয়ে প্রায় তিনঘন্টা বৈঠক করা হয়েছে। কোনো প্রস্তাবেই রাজি হননি আওয়ামী লীগ নেতা আহম্মদ আলী। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় ওই মাঠে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত ওই একই স্থানে দুই পক্ষের অনুষ্ঠান হবে কিনা তা নিয়ে স্থানীয় অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে।