নাটোর অফিস॥
ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল এস এস সি পাশের। মা বাবা গরিব তাই সেই স্বপ্ন পুরনে বাধা হয়ে দারায় দারিদ্রতা। পঞ্চম শ্রেনী পাশের পরে মাধ্যমিকে গড়ানোর আগেই শুরু করতে হয় সংসার। পাবনা থেকে নাটোরের সিংড়া উপজেলার সোনাপুর গ্রামে লোকমান হোসেনের সাথে সংসার জীবনের শুরু হয় ২০০২ সালে। দুই মেয়ে আর এক ছেলের মায়ের দায়িত্ব পালন করার সময় আবারো সেই স্বপ্ন দেখাতে স্বামী ভর্তি করে দিলেন চককালিকা পুর কারিগরি স্কুলে। নবম শ্রেনীতে উঠতেই স্বামীর অকাল মৃতুতে ভেসতে যায় স্বপ্ন। পুরো সংসার আর ছেলে মেয়েদের পড়া লেখার দায়িত্ব বহন করা। ছেলে মেয়ে পড়ার সময় পাশে বসে বই পড়ার আগ্রহ দেখে এবার ছেলে মেয়ের অনুরোধে আবারো পড়া লেখা শুরু ২০২৩ সালে। ড্রেস মেকিং ট্রেড থেকে সিংড়া কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে পরিক্ষায় অংশগ্রহন করি। আশা ছিল এ প্লাস পাওয়ার। তার পরেও ৪.৫৪ পয়েন্ট পেয়ে আমি অনেক খুশি। কথা গুলো বলছিলেন উপজেলার চামারী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওযার্ড সদস্য, ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি লিপি আক্তার হাসি। বড় মেয়ে লিমা খাতুন এস এস সি পাশ করে কলেজে। ছোট মেয়ে লিজা খাতুন নবম শ্রেনীতে। ছেলে লিয়াকত হোসেন গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পরিক্ষা দিয়ে এ প্লাস পেলেও মায়ের রেজাল্টে বেশি খুশি। লিপি আক্তার আনন্দ প্রকাশ করে বলেন ছেলের সাথে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে খুব ভালো লাগছে । তবে আক্ষেপ করে বলেন স্বামী বেঁচে থাকলে বেশি খুশি হতেন। আগামীতে সন্তানদের পাশাপাশি তিনি লেখা পড়া চালিয়ে যেতে চান।
ছেলে লিয়াকত হোসেন বলেন, আমাদের মানুষ করতে মা অনেক পরিশ্রম করেন পাশাপাশি পড়া লেখা করে পাশ করেছেন আমরা সন্তান হিসেবে বেশি গর্বিত আমার মা একজন উদ্দোক্তা নাড়ী সেলাই প্রশিক্ষন কেন্দ্র আছে সেখান থেকেই আমাদের যা উপার্জন হয় সেই অর্থ দিয়েই সংসার চলে আর আমার মা সহ আমাদের লেখাপড়ার করচ বহন করতে হয়।
সোনাপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, স্বামীর মৃত্যুর লিপি সন্তানদের জন্য মা হিসেবে এলাকায় অলোরন সৃষ্টি করেছেন লিপি শুধু মা হিসেবেই নয় সে নিজেও একজন সফল শিক্ষার্থী । আমরা এলাকার পক্ষ থেকে তার সাফলতা কামনা করি। চামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন মোল্লা বলেন, লিপি আক্তার আমাদের পরিষদের গর্ব তাদের মা ছেলের পাশের খবরে এলাকার সবাই খুব আনন্দিত । তার মেধা এবং পরিশ্রমের ফল পেয়েছে আমি তার আরো সফলতা কামনা করি। আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে সংবধোনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি।