নাটোর অফিস ॥
নাটোর সদর হাসপাতাল থেকে অভিনব কায়দায় এক দিনের একটি কন্যা শিশু চুরি হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১১ টার দিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড থেকে শিশুটি চুরি হয়েছে। নার্সের পরিচয় দিয়ে মুখোশধারী (মাস্ক পরিহিত)এক নারী দাদির কোলে থাকা শিশুটিকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ২০ মিনিটের সময় সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে শিশুটি ভুমিষ্ট হয়। জন্ম নেয়া শিশুটি দুর্বল হওয়ায় তাকে গাইনি ওয়ার্ড থেকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন সহ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শিশুর পিতা নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা মহিষডাঙ্গা গ্রামের মাহফুজুর রহমান পলাশ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তার স্ত্রী হাসনাহেনার প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে সকাল ৮ টার দিকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেলা ১১ টা ২০ মিনিটের দিকে হাসনা হেনা একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। আজ শুক্রবার সকাল থেকে শিশুটি তার দাদি খাইরুন নাহারের কোলে ছিল। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নার্সএর পোশাক পরিহিত মুখোশধারী (মাস্ক পরিহিত)এক নারী এসে খায়রুন নাহারের কোল থেকে শিশুটিকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে নিয়ে যায়। দীর্ঘ সময়েও নার্স ফিরে না আসায় তারা খোঁজ করতে শুরু করেন। পুরো হাসপাতাল চত্বরে সেই নারীর কোন খোঁজ পাওয়া যায়না। চুরি হওয়া নবজাতকেরপিতা পলাশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগ করে বলেন, তাদের অবহেলার কারনে তার শিশু কন্য চুরি হয়েছে। এছাড়া ট্রিপল নাইনে কল দিয়েও সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে পুলিশের সংগৃহিত হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়,ওই নারীর পড়নে কালো শাড়ি এবং লাল রংয়ের ওড়না দিয়ে মাথা ঢাকা ছিল। মুখে কালো রংয়ের মাস্ক পরিহিত ছিল। কয়েক দফা চক্কর দিয়ে ওই নারী শিশুটিকে চুরি করে দ্রুত চলে যায়। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় হাসপাতালে নিয়মিত কোন চিকিৎসক ছিল না এবং আউটডোর বন্ধ থাকায় রোগী ও তেমন দর্শনার্থীও ছিলনা। ভুমিষ্ট হওয়ার প্রায় ২৫ ঘন্টা পর হাসপাতাল থেকে শিশু কন্যাটি চুরি হয়।
নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ভুঁইয়া নবজাতক চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে নলডাঙ্গা উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামের মাহফুজুর রহমানের সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী হেনা বেগমকে প্রসব যন্ত্রনা
শুরু হলে নাটোর সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এদিন বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে হেনা বেগম একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু শিশুটি দুর্বল হওয়ায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শিশুটি তার দাদির কোলে থাকা অবস্থায় শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১১ টার দিকে নার্সের পোশাক পরিহিত মুখে মুখোশধারী (মাস্ক পরিহিত) এক নারী নবজাতক ওই শিশুকে অভিনব কৌশলে চুরি করে নিয়ে যায়। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ এসে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। এসময় শিশুর সজনদের সাথে কথা বলেন তারা। হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ বলেন, পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে। ঘটনার খবর পাওয়ার পর পরই পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। এছাড়া নবজাতকের বাব-মা সহ সজনদের বক্তব্য গ্রহন করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।